পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পচিশ বছর কাটিয়ে দিয়েছে তার বাবা তার মাকে নিয়ে জলপাইহাটিতে p এখন নিস্তার চাচ্ছে, কিন্তু যে-পথে গিয়েছে সেখানে নিস্তার নেই, সেখানে এক, রাত্তিরের সুলতানি থাকতে পারে হয় তো, কিন্তু আজীবনের শান্তি তৃপ্তি নেই ; নিস্তার যে-পথে আছে সেটা ভারী ভয় ও বিমূঢ়তা ও শোকের পথ মনে হকে নিশীথের মত মানুষের কাছে এই বয়সে আজ । এখানে আসতে বলছ, তুমি তোমার বাবাকে খাওয়াবে ? ‘কলকাতায় পথ কেটে নিতে পারলে, বেশ তাই হোক ; এখানে যে অণসতেই হবে এমন কিছু নয় । এখানে যে-ভণবের ঘোরে বাইশ-চব্বিশ বছর কেটে গেছে র্তার, সেটা টেসে গেল যেন । নতুন করে এখানে মন বসানো কঠিন । ও-সব মানুষের টনক সহজে নড়ে না, কিন্তু এক বার টলে উঠলে মনের মতন কোনো নতুন আশ্রয় না পেলে মৃত্যুকেও ভাল মনে হয় জীবনের চেয়ে । বেশি। বিদারক বিশৃঙ্খল অশাস্তিকেও ভাল মনে হয়, জলপাইহাটির বোকা নিরেস শান্তির চেয়ে ।” ‘আমি তোমার কোনো কথার কোনো মানে বুঝি না হরীত। তুমি পেচিয়েপেঁচিয়ে কথা বল। বলি, তুমি খাওয়াবে আমাদের—কলকাতায় তোমার বাবার সুরাহা না হলে ? *ই্যা । খাওয়াব বইকি ? হারীত আস্তে-আগস্তে বললে । এখানকার কলেজে একটা চাকরি জুটিয়ে নাও তুমি । দেখা করে হরিলালবাবুদের সঙ্গে । ‘দেখা করব ।” ‘কী রকম চাকরি পেতে পার ? ‘আমি তো এম-এ দিই নি । একটা লাইব্রেরিয়ানের কাজ হয় তো দিতে পারে । কিংবা টিউটরের কাজ ।” ‘দেখা করো, দেখা করে ফেল হরীত মেম্বারদের সঙ্গে, প্রিন্সিপ্যালের সঙ্গে।’ ‘এই তো যাচ্ছি, হরীত বললে, “তোমাকে বাবা দেড়শ টাকা দিয়ে গিয়েছিলেন, সোয়াশ আছে এখনো । আমিও কিছু এনেছিলাম টাকা, কিন্তু, গচ্ছা দিচ্ছি।’ ‘কী করে গচ্ছা গেল ?’ ‘এই চাষাভুষে মেথরদের দিয়ে দিয়েছি।” ס8ס\