পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘কেন নরেনের রক্ত বন্ধ করা হল ? সে অামার কাছে এসে বলে গেছে 8 শুনছ হারীত ? নরেনের রক্ত নেয়া হোক । সে আমাকে নিজের দিদির মত, মনে করে ।' কিসের মত মনে কর ? একটু খোচ খেয়ে বলল হার্যত । ‘আগমণর এই খাটে এসে বসেছিল, বললে, আগমণকে অণপনার নিজের দেওরের মত মনে করবেন বৌদি । নিশীথদ। ঠিক করে গেলেন সব । অণর হারীত এসে পাল্টে দিলে— "কখন এসেছিল নরেন ? ‘দুপুর বেলা । ‘আগজ ? ই ! তুমি তখন জুলেখাদের বাড়ি গিয়েছিলে । 'জুলেখাদের বাড়ি গিয়েছি কে বললে তোমাকে ? নরেন দেখে এসে বলে গেছে। নরেন, আজিজুদিন, আব্দুল গনি, বরকত আলি, রজ্জক মিঞা, ইসমাইল, চাদ মিঞা, মোনতাজ সববাই দেখছে ক দিন ধরে ওদের বাড়িতে তুমি ঘন-ঘন আসা-যাওয়া করছ হারীত। এই তোমার কাজ জলপাইহাটতে এসে ? এর চেয়ে ভাল কাজ ছিল তোমার কলকাতায় { জুলেখাকে মুখোমুখি বসিয়ে মাকে ফঁাকি দিয়ে তুমি—তোমার সব আগড়মবাগড়ম মনুষ্যত্বের কাজ হাসিল করে ফিরছ বুঝি এই রকম, জলপাইহাটতে এসে ?’ শুনে চিন্তিত হয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে রইল হরীত । নিস্তব্ধ হয়ে আরো বেশি চিন্তিত হয়ে পড়ছিল সে । শোক নেই, দুঃখ নেই, ভয় নেই, রাগ নেই, কেমন একটা গহবরের মতন অবস্থা মনের ভিতর, বাইরের লোকচলাচলের দেশে ; বাইরের প্রকৃতিকেও যেন নষ্ট করে দিতে চাচ্ছে । নিম, জাম, জামরুল বন, ছোট-ছোট পাখি, চোত-বেণশেখের বাতাস—অনবচ্ছিন্ন বাতাসের ভিতর মাঝে-মাঝে একটা মৌমাছির মত উড়ে যেতে দেওয়া মানুষকে ; সব সময়ই যে সে মানুষের মত বসে থেকে জীবনের সমস্যাগুলো র্যাটাবে সেটা ঠিক কথা নয় । চারদিককার অবচেতনার আকাশ-পৃথিবীকে তবুও তার পর কী এক সুচেতা নারীজিনিসের মত লক্ষ্য করে যেন রসিয়ে উঠল তার মন আনন্দে, কেমন একটা তামাসরত চেতনায় । ঠোটের কোণায় হাসির রেখ} ७8रै