পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘মজুমদার নিজেই দেখছে।’ ‘ভাল ডাক্তার তো মজুমদার, এই দিককার সব চেয়ে বড় ডাক্তার—কোনো উপকার হচ্ছে না ? ‘হচ্ছে কিছু-কিছু। যা দেখেছ তুমি, এর চেয়ে খারাপ ছিল। ‘খুব তো খারাপ দেখলাম আমি, জুলেখা খবরের কাগজটা ভাজ করে টেবিলের ওপর ছুড়ে ফেলে দিয়ে বললে, ‘আজকের স্টেটসম্যান কিনেছিলুম। পড়েছ আজকের স্টেটসম্যান, হরীত ? পড়ে দেখ। রেখে গেলুম তোমার জন্যে । তোমার মার পার্নিশাস অ্যানিমিয়া মনে হচ্ছে।’ ‘হ্যা, তাই বলেছে তো ডাক্তণর । চেঞ্জে গেলে ভাল হত । রক্ত দেওয়া হচ্ছে ।" ‘খুব দরকার রক্তের, জুলেখা ঘর-দোরের বেশি বাতাসের ভেতর শাড়ির আঁচলটা আঁtট করে জড়িয়ে নিয়ে বললে, ‘কে দিচ্ছে রক্ত ? ‘দিচ্ছিল তো নরেন মিত্তির । মাঝখানে তো আর-এক জনকে ঠিক করেছিলাম ! আবার নরেন দেবে । আজ দেবার কথা ছিল, ডাক্তার বললেন আগজ নয়, কাল নেয়া হবে ।” নরেন মিত্তির ? জুলেখা কেমন একটু চমকে নিজেকে সামলে নিয়ে আস্তেআস্তে বললে, "ছেলেটি কেমন যেন—শুনেছি।” ‘আমিও শুনেছি, দেখেছিও। কিন্তু তার রক্ত পরীক্ষণ করে দেখে নিয়েছেন ডাক্তার । ভাল আছে, মার কাজে লাগবে ।’ ‘বডড খারাপ রোগ অ্যানিমিয়া—এই পার্নিশাসগুলো মার একবার হয়েছিল । দশ-বার হাজার টাকা খরচ হয়ে গিয়েছিল বাবার । পুরীতে নিলেন, রাচিতে নিলেন, শেষে মুসৌরি পাহাড়ে গিয়ে ভাল হল। হারীতের দিকে তাকিয়ে জুলেখা বললে, "নিশীথবাবু কোথায় ? "তিনি তো কলকাতায় ।” সুলেখা আমাকে বলছিল। পনের কুড়ি দিন হয় গিয়েছেন শুনলুম। কলেজ তো ছুটি হয় নি। ছুটি নিলেন প্রফেসর সেন ? 'না, কাজ ছেড়ে গেছেন।" কাজ ছেড়ে ? শুনেছিল জুলেখা বটে, কিন্তু অন্য লোকের কাছে । হারাতের মুখে শোনে নি, একটু বেটাল ধাক্কা খেয়ে বললে, ছেড়ে দিয়ে গেলেন। হাতের ଏସ୍କୃଏ