পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘ইদরিশ তো তোমাকে দিয়েছিল |’ ‘আমি তোমাকে দিলুম।" কিন্তু আমি কাউকে দেব না। সুলেখাকে দিতে পারি। ‘তা হলে তো ইদরিশের কাছেই ঘুরে যাবে জিনিসটা আবার । ‘কেন ? তেরছা চোখে একবার জুলেখার দিকে তাকিয়ে নিয়ে হরীত বললে । হারাতর চকিত ভাবটা লক্ষ্য করছে জুলেখা ; ভেবে দেখছিল সে, সুলেখা টানে বুঝি হারীতকে ? টানুক, ভালই তো, কোনো ঈর্ষা নেই তার মনের ভেতর । নিজে কি টানে হরীতকে সে ? কী রকম টানে ? কিন্তু এ সব বিষয়ে বেশি কথা ভাববার ইচ্ছা ছিল না তার । অনেক কাজ তার হাতে ! সুলেখার মত ভাবুনে মেয়েমানুষ সে নয় । ‘তা দিয়ে দিতে পারে ইদরিশকে । যে যে-রকম জিনিস দেয় সেই জিনিসই তাকে ফিরিয়ে দেবার অভ্যেস ওর । যারা নতুন, অভ্যাগত, দূরের, তাদের এটা-ওটা-সেটা না দিয়ে পারে না । যারা একটু কাছের হয়ে গেছে, কিছু দেয় না তাদের । বীপের মেয়ে ও । আমি এ বিষয়ে মায়ের মেজাজ পেয়েছি।” ‘তা হলে আমি এই কোঁটোটা তোমার মাকে দেব ।” 'আমার মাকে ? তার সঙ্গে তোমার কথাবার্ত হয় ? হাসছ কেন হরীত ? ‘কথাবার্তা হলে ভাল হত। এ কোঁটোটা সুমনাকে না দিয়ে বনলেখা দেবীকে দিতাম আমি । এ বিষয়ে আমি আমার বাড়ির মেজাজ পেয়েছি জুলেখা ।” শুনে ঘাড় কত করে হারীতের ডণটে রসিকতায় একটু গলা ছেড়ে হেসে নিল জুলেখা । আচ্ছা মানুষই তুমি হরীত ! নিশীথবাবুর বিরুদ্ধে আমার প্রথম নালিশটা তেমন টি’কল না । টিকেছে কিছু। বৌও যদি মানুষের গোলকধাঁধা হয়, তা হলেও বৌয়ের এত বড় অসুখে জলপাইহাটিতে থেকে একটা কিছু হয়ে-টয়ে গেলে তার পর তিনি চলে গেলে ভাল করতেন । কিন্তু আমার দ্বিতীয় নালিশটার কী উত্তর দেবে হরীত ? ‘কী তোমার নালিশ ? "এ দেশ পাকিস্তান হতে না-হতেই তিনি ইণ্ডিয়ান ইউনিয়নে চলে গেলেন 98by