পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চলেছিল কথা চেপে রেখে ?" জুলেখা খানিকটা নিভৃত হয়ে বললে, ‘চেপে রাখলেই ভাল করতে হয় তো হরীত, কিন্তু তুমি তো সব বলে ফেল । অনেকটা দূরে একটা গাছের কোটরে একটা পেঁচাকে নিয়ে কাকগুলো মেতে উঠেছে, সে দিকে চোখ ফিরিয়ে জুলেখা বললে, ‘অচনাকে ভাল লেগেছে তোমার ; এ ঘাটে, সে ঘাটে, তার ঘাটেও কথা বাধছ হরীত ?” কাকগুলো উড়ে চলে যাচ্ছে, নিজের নীড খুঁজে পেয়েছে ঠোকর-খাওয়া পাখিটা হয় তো ; দেখছিল দু-জনে । ‘তা হবে, হরীত বললে, ‘কথা যদি বেনেতি হয়, তা হলে বেনেতি জিনিসের মতই তার চার দিকে ঝরতি-পড়তি হবে ।’ পকেট থেকে সিগারেট বার করে টেবিলের থেকে দেশলাই হাতড়ে নিয়ে জ্বালতে গিয়ে না-জ্বালিয়ে হরীত সরিয়ে রাখল দেশলাই, পকেটে সিগারেট রেখে দিল । “সিগারেট খাবে ?” ‘তুমি বসে আছ তো সামনে । ‘ওঃ, বসে আছি, জুলেখা একটু হেসে বললে, “এ সব ধুনোর গন্ধ রপ্ত হয় নি বুঝি অচনা মাসির ? কিন্তু সুমন মাসির ছেলে তো চাদ সদাগর’— ‘চাদ তো বটেই, হরীত হেসে বললে, কিন্তু ধুনোর গন্ধে কিছুই বলে না সনক । তুমি মিছেই বদনামটা করলে জুলেখা । জুলেখা একটু ঠাট্ট করে বলতে চেয়েছিল, অচনা কালী মনসার মত ; হারাত অচনাকে একেবারে সনক বানিয়ে ফেলেছে তাই । হারীতের কথাগুলো কানেই গেল না জুলেখার—উন্মার কথা বলেছে হারৗত, অন্তরের থেকে নয়। উপলব্ধি করে, অবিচলিত মনে বাইরের অনন্তব্রহ্মাণ্ডের ওপর দিনের আলোর অসৎ আবরণীর দিকে সোজা সাদা চোখে তাকিয়ে রইল জুলেখা । ‘খেলে না সিগারেট ? ‘না ।” ‘আমি বসে আগছি—তাই ?’ 'না, এমনিই ইচ্ছে করছে না ।" “মনসা আর চাদের কথা বলছিলাম—একটু বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে ? ‘হ্যা, সনকার কথা পেড়ে আমিই ছেড়েছিলাম। কিন্তু, জিনিসটা ও-রকম ঠিক \9yd; २6;