পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নয় । কী রকম—তুমি বুঝবে জুলেখা । শেষ পর্যন্ত তোমাকেই সব কথা বলি —আর কাউকে নয়।’ ‘আচর্ণনার কথাটা বল নি ?” ‘কাকে ? সুলেখাকে ? বাইরে তালপাতার ব্যজনের শব্দ হচ্ছিল, আকাশবাতাস তালবৃন্তের দিকে হরীত চোখ চালিয়ে নিয়ে বললে, “না।’ ‘অচনাকে বলেছ সুলেখার কথা ? ‘ভাবে-প্রকারে বুঝে নিয়েছে কিছু হয় তো, আমি খুলে বলি নি ।” নীল তালপাতাগুলোর দিকে জুলেখা তাকিয়ে ছিল, শুনছিল কেমন বাতাসে নড়ে-চড়ে পাতাগুলো দিকবিদিকের কথা বলে, দৃষ্টি ঘরের ভেতর ফিরিয়ে এনে, আবার বাইরে পাঠিয়ে দিয়ে বললে, ‘কী চায় তোমার কাছে অচfনা ?’ , L

  • সে আগমণকে এখানে থাকতে বলে |’ |

‘বেশ ভাল কথাই তো । অণমরণও তো সবাইকে থাকতে বলছি । কিন্তু আচনি৷ শুধু তোমার বাবাকে থাকতে বলেছিল, তিনি চলে গেলে তোমাকে শুধু থাকতে বলছে । আমাদের মিটিং-ফিটিঙে অণসে না তো অচনি । ইউনিয়নে যেও না, পাকিস্তানে থাকো, পাকিস্তানে কাজ করেন, ঠিক এটাই যে তার লক্ষ্য অামার তা মনে হয় না ।” -r মৃত্যু পর্যন্ত মে এখানেই থাকবে ঠিক করেছে । আমাকেও থাকতে বলছে ; অণর সঙ্গে-সঙ্গে থেকে কাজ করতে বলছে ।” মৃত্যু পর্যন্ত ?’ জুলেখা ভুরু তুলে হেসে বললে, এ বড় দূর পাল্লা দাবি, যাই বল হগরীত। কে কবে মরবে—পচিশ-ত্রিশ-চল্লিশ বছর পরে’—বলতে-বলতে গম্ভীর হয়ে হারাতের দিকে তাকিয়ে জুলেখা বললে, “ঠিক বলেছে আচনা । যেন দেখেছি আমি সব মনে হয়, তোমাদের মৃত্যু হল, তার পর আমার মৃত্যু হল এই জলপাইহাটিতেই ৷” শুনে কেমন যেন লাগল হারাতের, বললে, ‘জিনিসটাকে তুমি বড় বাড়ের ভেতর নিয়ে চলেছ ।” “আচনার খেইটা তো বড় হরীত । তার চেয়ে বড় ভাবছি তাকে ?’ 'না, ওরটা বড় নয়, যে-রকম হাত ছড়িয়ে তুমি মেঘনার এ পার ও-পার ধরছ— সে রকম নয়, অন্য রকম । তোমারটা বড় ।” و امامی)