পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জুলেখা একটু হেসে বললে, “আমারটা বড় ? কে-কে অণর আমার বড় চৌহুদির, ভেতর ? অচনার একেবারে ছোট, তারই-বা কে আছে ? সাই-সঁাই সো-সো শব্দ হতেই হারাত আর জুলেখা আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখল, অনেক ওপরে মেঘেরও ওপরে, যেন কী রকম বিদ্যুতের গতিতে অসংখ্য পাখি । হয় তো হরিয়াল, বুনো হাস, নানাশির, মরালী, ছুটে চলেছে । পাখিগুলো শূন্যে মিলিয়ে গেলে জুলেখা বললে, “আমার মনে হয় অচনা তোমার বন্ধুর মত নয় হরীত । ‘কী করে বলছ ?’ ‘আমি টের পাচ্ছি ।" পাখিদের মত বুঝি ? ‘কুবাতাস দেখতে পায় তারা দূর থেকে বুঝি ? ‘হ্যা, সে অণকাশ ছেড়ে দিয়ে চলে যায় তারা । ‘তুমিও ছেড়ে দিয়ে চলে যাও হরীত । হারীত দুটো বোলতার আগপ্রাণ ওড়াউড়ি ছোটাছুটির দিকে তাকিয়েছিল । এক বার ঘরে ঢুকে বাতাসে উৎক্ষিপ্ত হয়ে হয় তো, এমনিই, বিদ্যুতের গতিতে সমস্ত ঘরে ঘুরে বেড়াচ্ছে । তার যে-পথ দিয়ে ছুটছে-ঘুরছে সে সব স্থান নির্দেশ করে যদি আলোর রেখা টেনে দেয়া যেত, তা হলে আশ্চর্য বিদ্যুতের আঁকিবু'কিতে সমস্ত ঘরটা কী রকম ঝলমল করে উঠত। বাইরে ছুটে যাচ্ছিল বোলতাগুলো, সরবতি লেবুর ঝাড়ের ভেতর ঢুকে সা করে করমচা বনের দিকে —তেপান্তরের পানে । ‘মেয়েমানুষের কর্তৃত্বপ্রীতি নিয়ে সে তোমাকে আত্মস্থ করেছে হরীত । যে-সব ছেলের দূর বিদেশ থেকে অবসন্ন হয়ে ফিরে আসে তারা মাকেই আগে ভালবাসে, বন্ধুকে পরে । সুমনা মাসি বিশেষ কেউ নয় নিশীথবাবুর কিংবা তোমার জীবনে । অচনা অনেকটা দ্রৌপদীর মত হতে চাচ্ছিল নিশীথবাবুর, হতে পারে নি ; অনেকটা মায়ের মত সে তোমার, তবুও মুনির বৌটি অনেকটা অহল্যার মত, হরীত । বোলতাগুলো তেপান্তর থেকে, করমচা বন থেকে, সরবতি লেবুর ঝাড়জঙ্গলের ভেতর থেকে, অনির্বচনীয় হলুদ জিনিসের মত বট করে ঘরের ভেতর ঢুকে পড়েছে আবার ; কিন্তু বোশেখের পড়ন্ত বিকেলের শেষ আলো-বাতাসের Կ)ԵԳ