পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৪১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বসেই থাকতে হচ্ছে—পুরুষমানুষ যে-বয়সে বাস্তবিকভাবে প্রথম ভালবাসতে আরম্ভ করে, এই মেয়েটিকে তখনই ভালবেসে এনে নিজের জীবনে বসিয়ে রাখবার সুযোগ পেয়েছিল প্রমথ—পুরুষের ভালবাসা যে বয়সে সত্যিই শেষ হয়ে যেতে থাকে, তার সীমানায়ও এই মেয়েটিকে সেই জায়গায়ই দেখতে পাচ্ছে প্রমথ—এই মেয়েটিকে নিয়েই প্রমথের জীবনের প্রধান ভালবাসণর প্রথম ও শেষ ; এর পর যে-সব প্রণয় ও অণকাঙ্খা আসবে, জীবনে বিচারকে তা এত অভিভূত করে রাখতে পারবে না—কিন্তু এখনো জ্ঞান কিছু নয় ; দৃষ্টি, বিচার সমস্তই আজও প্রেমের আচ্ছন্নতায় লিপ্ত হয়ে একটু রগড় করবারও সুযোগ পাচ্ছে না । এই মেয়েটাকে একটু ঠাট্ট দিয়ে বেঁধা, নিজেকে খানিকটা উপহাসাম্পদ করে দেখানো, শুভেন্দুর মত গরুর ঠ্যাংকে কল্যাণীর মত বিড়াল ছানার নিষ্কলঙ্ক নিবুদ্ধির কাছে ছেড়ে দিয়ে চলে যাবার মত একটা বিস্তৃত তামাসা বোধের শক্তি—জীবনে এ সব কখনো আসে নি । প্রেম এখনও ; অভিজ্ঞতা ও কাণ্ডজ্ঞানের ভাড়ামি পরে । কিন্তু হাতড়ে সে গুলোকে যদি এখনই পাওয়া যেত ; হায় ! কিন্তু যখন পাওয়ণ যাবে বহু অগ্রসরগ্রস্ত জীবনের স্নিগ্ধ রুচির ভিতর সেগুলোকে ব্যবহার করবার ইচ্ছে হবে না আর, নিজনে নিজের মনকে দু দণ্ডের আমোদ দেওয়া চলবে मNजैশুভেন্দু বললে, ‘তুমি হয় তো অবাক হয়ে ভাবছ কল্যাণীর সঙ্গে আমার কোথায় আলাপ হল—এত খানিই বা কী করে হল— কল্যাণী বললে, “আমি কী বলি নি তোমাকে প্রমথদা ? আমার মনে পড়ছে "-5gةTi fة শুভেন্দু বললে, ‘আলাপ হল এদের বারাকপুরের বাড়িতে কল্যাণীর দিদি—, সুরমাদির বিয়েতে ; সেখানে তোমাকে দেখি নি তো প্রমথ, প্রত্যাশাও করি নি, তোমার কথা মনেও হয় নি—হবেই বা কী করে ? কল্যাণীদের সঙ্গে তোমার এত আলাপ কে বুঝবে বাবা বল ?’ শুভেন্দু বললে, কিন্তু তুমি সুরমাদির বিয়েতে যাও নি কেন প্রমথ ? কল্যাণীকে বললে, ‘চিঠি দণও নি ? —‘দিয়েছিলাম’ —“তবে ?” SO○