পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কী করবে সুমনাকে নিয়ে অণজ ? স্ত্রীর শরীর একেবারে বাতিল । হাড়ের ভিতর দিয়ে চি চি করে যে-শব্দ বেরয়, নিশীথের মত মানুষের মনের খোরাক মেটাতে গিয়ে জাউয়ের মত কাজ করে তা, ভুসির মত ভুর হয়ে পড়ে থাকে । ‘তোমাকে চেঞ্জে যেতে বলেছে ডাক্তার মজুমদার । ‘কোথায় যাব ?’ ‘কোনো শুকনো জায়গায় ঃ কাছেই ; দেওঘর, গিরিডি যেতে পারো, মিহিজাম, জামতাড়া, ঝাড়গ্রাম—' ‘টাকা আছে চেঞ্জে যাবার ? ‘থার করে নিতে হবে ।’ ‘প্রভিডেণ্ড ফাণ্ডে টাকা নেই ? "সব নিয়েছি, অণর নেই ।” ‘কার কাছ থেকে ধার করবে ? নিশীথ একটু ভেবে বললে, ‘জিতেনকে বলে দেখব । কিন্তু জিতেনবাবু তো টাকা ধার দেন না । সুমনার দিকে খানিকটা সরস বিস্ময়ে তাকিয়ে নিশীথ বললে, ‘কে বললে তোমাকে ?’ ‘তুমিই তো বলেছ।’ ‘আমি বলেছি ? সুমনার মরুঞ্চে শালিখের মতো চোখের ঘোলাটে ভাবটা ভাল লাগছিল না নিশীথের । একটা বেড়াল...ভারী ধবধবে সুন্দর তিব্বতি বেড়ালের মত মোটাসোটা সাদা ফনফনে লোমে লোমাচ্ছন্ন ; বেড়ালট মাদি ; অর্জুন গাছের ছায়াকাটা রোদে বসেছিল ; বেড়ালটার সুন্দর মুখের দিকে কিছুক্ষণ স্নিগ্ধ সচকিত তাকিয়ে রইল নিশীথ ; মুখটা বেড়ালের, না নারীর ছিল কোনোদিন । জীবনে সৌন্দর্যের প্রবেশ, নারীদের সঙ্গে অলিতে গলিতে ঘোষণঘোষি, নিশীথের জীবনে যে খুব বেশি ছিল কোনোদিন তা নয়—কিন্তু সম্ভাবনা ছিল, আবহাওয়া ছিল, প্রতিশ্রুতি ছিল । "জিতেনের কাছে ভাল করে চেয়ে দেখি নি তো আমি কোনোদিন । "এবার দেখবে ’ ‘না দেখে উপায় কী ?