পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দোষে রক্তের চাপে মরে যাচ্ছে কেউ । আশেপাশে, ‘এই তো তাকে দেখে ছিলুম, তাকে দেখছি না আর’, কারা যেন বলে যাচ্ছে, দিনরাত দেয়ালে অনর্গল ছায়ার চারণায় তোমাকে আমাকে সকলকে মুহূর্তের মধ্যে ছায়ায় দগড় করিয়ে আছে, আলো আছে, ইতিহাসে কত বিখ্যাত যুগ কেটে গেছে, উদয় হবে না কি অতীতকে ভালো করে চিনে নিয়ে আরো বিশ্রুত সময়ে আরো ভালো আলোর । কিন্তু আজকের যুগের ইতিহাসের খাতায় যে-অঙ্ক লেখা আছে এর নিরেট সিদ্ধান্তকৌমুদীর পথে গরমিল লাগিয়ে ফুর্তি করতে গেলে, সেটা ফুর্তির ভুল—অঙ্কের ভুল নয়। তাই না কি নিশীথ ? ঠিক করে অঙ্ক কষেও কে তবু উৎসব আনতে পারবে ? কোথায় সেই মহানুভব দিকনির্ণয়ীরা । সেই শিব অনির্বচনীয় প্রাণঘন আন্দোলন ? কোথাও আছে বলে মনে হচ্ছিল না নিশীথের । কবি সে ; বিক্রণশী মনের অখল উৎসের শ্ৰী ছাড়া কী আর কবির মন ? নির্ভুলভাবে এ শতাব্দীর এ আবর্তের শোকাবহ অঙ্ক কষে—এরই ভিতর, যে-উৎসব রয়েছে তবুও, তাতে মজা করে জীবনের পথ থেকে একদিন সরে যেতে হবে তাকে । জলপাইহাট থেকে চলে যাচ্ছে নিশীথ, এখানে ফেরার কথা নেই অণর । জিতেনের ওখানে মাসখানেক থাকবে । জিতেনকে বলে ভাল চাকরি পাওয়া গেলে ভাল ; পাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম । মোটা রকমের ধার পাওয়া যাবে না । দেখা যাক কী হয় । ডাক্তার মজুমদারের চিকিৎসার মেয়াদ কাটিয়ে সুমন। যদি বেঁচে থাকে তা হলে ফিরে এসে তাকে কলকাতায় নিয়ে যেতে হবে । না হলে স্ত্রীর শ্রাদ্ধশান্তির জন্য হয় তো বা জলপাইহাটিতে দু-চারদিনের জন্য আগসবে নিশীথ—হয় তো অণসবে না । এ-রকম অন্তিম অবস্থায় স্ত্রীকে ফেলে চলে যাচ্ছে কেন নিশীথ ? এটা কি এ যুগের শোকাবহ অঙ্ক কষবার পথে একটা নিতান্তই ছোটখাট ধাপ নিকেশ করে নির্ভুল একটা যোগ কি বিয়োগ : ঠিক তাই । কলকাতায় যাওয়া ছাড়া নিশীথের অণর-কোনো উপায় নেই । নিশীথের হাতের সব টাকা ফুরিয়ে গেছে, জলপাইহাটতে কণর কাছে তেমন কিছু ঢালাও থার পাওয়া যাবে না, পেলেও শোধ করে দেবে কী করে সে ? কলেজের উপর নির্ভর করা চলে না এখন অণর । অনেক দিন থেকেই কলেজের কর্তৃপক্ষকে সে কথা সে বলবে ভেবেছিল—কিন্তু দু পক্ষেরই শান্তি ও vს)br