পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মেধাবৃত্তি ভাঙবার ভয়ে কিছুটা অবিচার ও লাঞ্ছনা সহ করেও ব্যাপারটা চেপে-চেপে যাচ্ছে—সে কথাটা বাস্তবিকই এত দিন পরে তাদের বলে ফেলেছে সে—হয় তো অতিরিক্ত জোর দিয়ে। বলেছে ও দেড় শ টাকা মাইনেতে পোষাবে না তার, সোয়া দুশ-আড়াইশ, অন্তত দুশ কি দিতে পারবেন ওঁরা ? না দিতে পারলে দুঃসময়ে নিজের পথ দেখা ছাড়া কী করবে নিশীথ ? নিশীথ ছুটির দরখাস্ত দিয়েছে, কী কারণে দরখাস্ত, পরিষ্কার করে ব্যক্ত করে নি ; ডাক্তারের সাটিফিকেটও জুড়ে দেয়নি। কর্তৃপক্ষ মুখফোড় নিশীথকে কোনোকালেই বিশেষ পছন্দ করে না । এবারে নাকচ করে দেবে । দিক । যা করেছে ঠিকই করেছে নিশীথ । সুমনকে দেখবার জন্যে রইল ডাক্তার মজুমদার আর তার কম্পাউণ্ডার জোৎস্না । ডাক্তারি করে মোটা টাকা পাচ্ছে বলে নয়, এমনিই ওর মন খুব পরিষ্ক। র-—বেশ প্রশান্ত । ডাক্তারটি নিশীথের নিজের দণদণর মত, কম্পাউণ্ডার জোৎস্নার উপর ষোল অনা নির্ভর করতে পারা যায় ; মজুমদার প্রায়ই বলে । সুপারিশটাকে নিশীথ খতিয়ে দেখেছে ; অনুভব করেছে ; হ্যা ; এতেই হয়ে যাবে ; আর-কী । মহিম ঘোষাল আর তার পরিবার তো সুমনার সঙ্গেই রইল এ বাড়িতে । মহিমের মাথাটা লজিক—মনে কলেজের লজিক দিয়ে, শানানো—বুদ্ধি দিয়ে নয় ; বেকুব নয় তাই বলে মহিম ; বিবেচনা শক্তি—মনে হয় যেন আছে বেশ ; খুব হাতে-কলমে না থাকলেও ; ভিতরটা ভাল—তবুও সেটাকে যেন আরো ভাল করতে চাচ্ছে মহিম ; এ জিনিসটা ফিটফাট ভালর চেয়ে ভণল । মফস্বল কলেজের কর্তৃপক্ষ এ-রকম খানদানি মানুষকে ঠকিয়ে ভূত ভাগিয়ে দিল—পনের বছরের সার্ভিস ; মোটে এক শ তিরিশ টাকা মাইনে । এ সব জিনিসের একটা বিধান হবে না এখনো ? মহিমের মত বিবেচনা না-থাকলেও এর চেয়ে বেশি বুদ্ধি আছে মহিমের স্ত্রী অর্চনার ( তাকে অৰ্চিতা ডাকে নিশীথ ), বুদ্ধিটা, নিজের স্বার্থকে কেন্দ্র করেই। কিন্তু তাই বলে পরের ক্ষতি করবার কোনো মতলব নেই ; পরের উন্নতি দেখলে তার খারাপ লাগে না। কুঁড়ে মানুষ ; মাঝে-মাঝে কেমন গোরু-হরিণের মত চোখ তুলে তাকায় ; কেমন একটা বিসদৃশ সাদৃশ্য এসে পড়ে। কিন্তু এটা ঠিক—নিশীথের هطا