পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

'না, এমনিই, আমি ভেবে দেখলাম ।’ অর্চনা একটু কাছে এগিয়ে এসে দু-এক পা পিছে সরে গিয়ে বললে,— ‘কলকাতায় যাওয়ণ অfর না-যাওয়া ? একই জিনিস । তা বটে তো । কেন যাচ্ছ তা হলে সে গণটকাটার দেশে । চার হাত পায়ে যেতে, ফিরে আসতে, কম-সে-কম পঁচাত্তর তো বটেই।’ ‘একই তো জিনিস, মাঠ অপর গোরু । মাঠ আর গোরু ? নতুন শাস্তর বার করলে বুঝি। না, যাও তুমি, কলকাতায় ঘুরে এসো, মাথায় একটু হাওয়া লাগিয়ে এসো ' অর্চিতার দিকে তাকিয়ে হে হে করে হেসে উঠল নিশীথ । এতক্ষণ অন্যদিকে চোখ ফিরিয়ে ছিল সে, এইবারে মঠ দেখেছে, গোরু দেখে ফেলেছে । অর্চিতা নিশীথকে ঘোষে দাড়িয়েছিল প্রায়—হাসির হল্লায় দু-তিন পা পিছিয়ে গেল । ভগস - ভ{সা বড় চোখের গবাক্ষ পথ দিয়ে নিশীথের দিকে তাকাল, ঠোটের উপর একটু আঁচল টেনে, কি না-টেনে । ‘হ{সছ যে ! হাসবার কথা ক। হল । হেসে উড়ে গেলে দেখছি ।” নিশীথের হাসি থেমে গেছল, বললে—‘এই মাঠ ঘাট আকাশ বাতাস আণর দেখব না ; এখানে চল্লিশ বছর ছিলাম । চেনো কি গোলাম কিউব্রিয়াকে অচিতা ?’ সে কে ?’ আছে—বললে নিশীথ, ‘আছে একজন মুসলমান মহামন, পদ্মা-এপারের দেশে সম্প্রতি এসেছে—ওপারের থেকে—' অচিত নিশীথের কথার ধারণ লক্ষ্য করছিল ; কী যে বলছে ? কী না বলছে ! তার অধ্যাপক স্বামীর সঙ্গে অনেক দিন ধরে থাকতে-থাকতে দু-চারটে ইংরেজি কথা সে শিখে ফেলেছে । এমনি অচিতা ক্লাশ নাইন অবিদ পড়েছিল । ভাবছিল লেগপুলিং করছে না তো নিশীথ । মহিমের চেয়ে বেশি বুদ্ধি রাখে অচিতা । 'কালিজিরা নদীর তীরে একটা মাঠ আছে, মাঠে একটা ধুলো রঙের গোরু থাকে । গোলাম কিউব্রিয়ার গোরু । মাঝে-মাঝে মাঠের উপর একজন মানুষ শুয়ে থাকে’—বলে নিশীথ অর্চিতার দিকে তাকাল। মনে হল, নিশীথের ইঙ্গিত ধরে ফেলেছে যেন এই ক্ষমাহীনভাবে বুদ্ধিমতী মেয়েটি । কিন্তু তবুও Գ Տ