পাতা:জীবনীকোষ-ভারতীয় ঐতিহাসিক-দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

ভারতীয়-ঐতিহাসিক
কপিল

করিয়া বিশেষ প্রশংসাভাজন হন। ১৮৮৩ খ্রীঃ অব্দ হইতে দীর্ঘকাল তিনি বোম্বাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্য ছিলেন এবং উহার নানাপ্রকার কার্য্যের সহিতও ঘনিষ্ঠ ভাবে যুক্ত থাকিতেন। কর্ম্মজীবনেও তিনি ক্রমশঃ উন্নতি লাভ করিয়া ব্রিগেড সার্জ্জন লেফটেনেণ্ট কর্ণেলের (Brigade Surgeon, Lieutenant Colonel) পদ লাভ করেন। তিনি কিছুকাল ব্রহ্মদেশের সিংহাসনচ্যুত রাজা থিব’র চিকিৎসক ছিলেন।

 ডাঃ কীর্ত্তিকর মারাঠী ভাষাতেও সুপণ্ডিত ছিলেন। তদ্‌রচিত বহু মারাঠী কবিতা ও গান এখনও বিশেষ সমাদৃত হইয়া থাকে। তিনি উদ্ভিদবিদ্যায়ও বিশেষ অনুরাগী ছিলেন এবং কিছুকাল বোম্বাই নগরীর ন্যাচারাল হিষ্ট্রী সোসাইটি (Natural History Society) এবং উদ্ভিদ-বিদ্যা বিভাগের সম্পাদক ছিলেন। বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পত্রিকায় তাঁহার অনেক মুল্যবান প্রবন্ধ প্রকাশিত হইয়াছিল। বোম্বাই প্রদেশের বিষাক্ত উদ্ভিদ বিষয়ক প্রবন্ধ বৈদেশিক পণ্ডিত মণ্ডলীরও প্রশংসা লাভ করে। তিনি একাধিক বৈদেশিক বিদ্বজ্জন পরিষদেরও সদস্য ছিলেন। ১৮৯১ খ্রীঃ অব্দে বোম্বাই বিশ্ববিদ্যালয় তাঁহাকে “উইলসন ভাষাতত্ত্ব অধ্যাপক” (Wilson Philological Lecturer) নিযুক্ত করেন। উক্ত পদে প্রতিষ্ঠিত
থাকিয়া তিনি যে সকল সারগর্ভ বক্তৃতা প্রদান করেন, তৎফলে মারাঠী ভাষা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাদর লাভ করে। তিনি দক্ষিণাত্যের নানা জনহিতকর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহিত ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন। তাঁহার নিজস্ব পুস্তকাগারে বহু ভাষার এবং নানাপ্রকার জ্ঞানপ্রদ পুস্তকের সংগ্রহ ছিল।

কপিল—মহর্ষি কপিল সম্ভবতঃ খ্রীঃপূঃ ৬৫০—৫৭৫ সালের মধ্যে বর্তমান ছিলেন। তিনি সাংখ্য দর্শনের প্রণেতা। তিনি ঈশ্বরের অস্তিত্ব স্বীকার করিতেন ন। ‘ঈশ্বরাসিদ্ধেঃ’ কেন না ঈশ্বরের অস্তিত্ব সপ্রমাণ হয় না। তাঁহার গ্রন্থ পাঠ করিলে বিস্ময়ে অভিভূত হইতে হয়। অতি প্রাচীন কালে হিন্দু সভ্যতার ও জ্ঞানের কতদূর উন্নতি হইয়াছিল, তাহা এই সাংখ্য-দর্শন পাঠ করিলেই সুস্পষ্ট অনুভূত হয়। যে বিবর্ত্তন-বাদ (Theory of Evolution) বর্ত্তমান ইউরোপীয় পণ্ডিতের আবিষ্কার বলিয়া আমরা পাঠ করিয়া থাকি, বহু পূর্ব্বে এদেশের কপিল মুনি তাহার উল্লেখ করিয়া গিয়াছেন। (সাংখ্য প্রবচন ১।৬৪ সূত্র দ্রষ্টব্য)। তিনি ঈশ্বরের অস্তিত্ব স্বীকার করিতেন না। সুতরাং নাস্তিক। তাহা হইলেও তিনি বেদের প্রাধান্য স্বীকার করিতেন, ইহাই আশ্চর্য্যের বিষয়। কপিলের মতে সমস্ত জগৎ প্রকৃতি (জড় প্রকৃতি) হইতে উদ্ভূত।