পাতা:জীবনীকোষ-ভারতীয় ঐতিহাসিক-দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
কপিলেন্দ্র
জীবনী কোষ
১০
পরমাত্মা ও প্রকৃতি উভয়ই অনাদি। তিনি সৃষ্টি করেন না, দ্রষ্টা মাত্র। মানবের কর্ম্মফলানুসারে আত্মা দেহান্তর আশ্রয় করে। কর্ম্মক্ষয়ে দেহান্তরে প্রবেশ করে না, পৃথক অবস্থান করে। কপিলের মতে বস্তু মাত্রই সৎ, সৎ হইতে সতের উৎপত্তি। বীজ ভূমিতে উপ্ত হইলে বীজের ধ্বংস হয় বটে কিন্তু ইহার সম্পূর্ণ ধ্বংস হয় না। বীজের অবয়ব বর্ত্তমান থাকে এই ভাবভূত অবয়ব হইতে অঙ্কুর উৎপন্ন হয়। কপিলের মতে দুঃখ ত্রিবিধ—আধ্যাত্মিক, আধিভৌতিক ও অধিদৈবিক। বাতপিত্তাদির বৈষম্যনিবন্ধন শারীরিক এবং ক্রোধাদিজনিত মানসিক দুঃখকে আধ্যাত্মিক দুঃখ বলে। মনুষ্য-পশ্বাদি হইতে জাত দুঃখ আধিভৌতিক এবং যক্ষ, পিশাচাদি হইতে অথবা ভূমিকম্পাদি প্রভৃতি হইতে জাত দুঃখকে অধিদৈবিক দুঃখ বলে। এই ত্রিবিধ দুঃখের আত্যন্তিক নিবৃত্তিই মুক্তি। এই মুক্তিলাভের একমাত্র উপায় জ্ঞান লাভ। সাংখ্য মতে জগৎ ব্যক্ত ও অব্যক্ত এই দুই ভাগে বিভক্ত। ব্যক্ত শব্দে প্রতীয়মান জগৎ এবং অব্যক্ত শব্দে প্রকৃতি বুঝায়। সাংখ্য মতে জগৎ সত্য কিন্তু ক্ষণিক। বেদান্ত মতে জগৎ মিথ্যা। বৈদান্তিক মতে রজ্জুতে সর্প জ্ঞানের ন্যায় ভ্রান্তি মাত্র। ইহার উত্তরে সাংখ্য বলেন,—সর্পের
স্থানে যেমন রজ্জু, আছে, তদ্রূপ সংসার স্থানে একটা কিছু থাকা চাই এবং ইহাই প্রকৃতি। (২) অগ্নিপুরাণের ৩৯ অধ্যায়ে শিল্প শাস্ত্রকার এক কপিলের উল্লেখ আছে। (৩) কাশ্মীরপতি হর্ষদেব (১০৮৯—১১০২ খ্রীঃ) লোহর প্রদেশের সামন্ত নরপতি উদয়সিংহের মৃত্যুর পরে তাঁহার অন্যতম সেনাপতি ক্ষেমের পৌত্র কপিলকে লোহার রাজ্যে প্রতিষ্ঠিত করিয়াছিলেন। উচ্চল কাশ্মীর সিংহাসন অধিকার করিবার উদ্যোগী হইলে, কপিল উচ্চলের সৈন্যদলকে বাধা দিতে যাইয়া পরাজিত হন। পরে বিদ্রোহী গর্গের সহিত যুদ্ধে তিনি নিহত হন।

কপিলেন্দ্র—উড়িষ্যার একজন প্রবল পরাক্রান্ত নরপতি। তাঁহার নামান্তর কপিলেশ্বর। তিনি ১৪৩৫ হইতে ১৪৭০ খ্রীঃ অব্দ পর্য্যন্ত রাজত্ব করেন। ১৪৭৫ খ্রীঃ অব্দের পূর্ব্বে তিনি সমস্ত পূর্ব্ব-উপকূল অধিকার করেন। সমসাময়িক দাক্ষিণাত্যের পাঠান রাজ্যসমূহ তাঁহার পরাক্রমের বিষয় সবিশেষ অবগত ছিলেন। ‘বুরহান-ই-মা-আসির’ নামক ইতিহাসের গ্রন্থকার, তাঁহার পুস্তকে কপিলেন্দ্রের পরাক্রমের কথা উল্লেখ করিয়াছেন। ফিরিস্তা গ্রন্থ হইতে জানিতে পারা যায় যে হুমায়ুন শাহ বাহমনির সেনাপতি খাঁ জাহান, বরঙ্গল (একশিলা) নগরী আক্রমণ করিলে,