কৃষ্ণদাস চরিতামৃত” গ্রন্থ প্রণয়ন করেন। এই গ্রন্থ তিনি অসীম অধ্যবসায় সহকারে পূৰ্ব্বাচার্য্য বৈষ্ণবগণের বন্তগ্রস্থ আলোচনা করিয়া এবং জীবিত গোস্বামীগণের মুখে শ্রবণ করিয়া নয় বৎসরে সমাপ্ত করেন । কবিরাজ গোস্বামী মহাশয়ের সকল গ্রন্থই অসাধারণ কবিত্ব এবং পাণ্ডিত্য পূর্ণ, কিন্তু ভক্তি ও জ্ঞানের এরূপ অপূৰ্ব্ব সমন্বয় ‘চৈতন্য চরিতামৃত ব্যতীত অপর কোন গ্রন্থে দৃষ্ট হয় না । গ্রন্থের অন্তনিহিত ভাবসম্পদ ব্যতীতও এই গ্রন্থ গোস্বামী মহাশয়ের সংস্কৃত ও ব্রজভাষায় প্রগাঢ় জ্ঞানের পরিচায়ক । উল্লিখিত গ্রন্থ সমূহ ব্যতীত কৃষ্ণদাস আরও বহু গ্ৰন্থ রচনা করেন । তাহার জন্মস্থান ঝামটপুরে আজি ও র্তাহার কাষ্ঠ পাদুকা ও তদীয় শিষ্য মুকুন্দ দত্ত লিখিত ‘চৈতন্য চরিতামৃত” গ্রন্থের প্রতিলিপি রক্ষিত আছে । কবিরাজ গোস্বামীর স্বহস্ত লিখিত মূল পুথিখনি বৃন্দাবনের রাধামাধবের দেব-মন্দিরে রহিয়াছে। এই গ্রন্থ রচনার পর উহা প্রচারের জন্ত কৃষ্ণদাস ব্রজমগুলের তদানীন্তন বৈষ্ণবগণের নেতৃস্থানীয় জীব গোস্বামীর অনুমতি প্রার্থনা করিলে, রূপ, সনাতন প্রমুখ বৈষ্ণবাচার্য্যগণের সংস্কৃত গ্রন্থাবলীর সমাদর হ্রাসের সম্ভাবনায় তিনি উহ। প্রকাশের অনুমতি দেওয়৷ দুরে জীবনী-কোষ ›ፃ© দীর্ঘকাল পরিশ্রমের ফল এইরূপে নিরর্থক হইবে আশঙ্কা করিয়া কৃষ্ণদাস ব্যাকুল হইয় পড়েন । যাহা হউক পরে যখন জানিতে পারিলেন, তাহার শিষ্য মুকুন্দের নিকট গ্রন্থের এক প্রতিপি রক্ষিত আছে, তখন তিনি কথঞ্চিৎ সাস্তুনা লাভ করিলেন । ইছার পর গোড় হইতে আগত কবকর্ণপুর এই বৃত্তান্ত শ্রবণ করিয়া, জীব গোস্বামীর নিকট পুনরায় ঐ গ্রন্থ ও উহার স্বরচিত এক টীক। প্রচারের প্রার্থনা করিলে, অনিচ্ছাসত্ত্বে ও গোস্বামী মহাশয় অনুমতি প্রদান করেন । জীবগোস্বামী মহাশয়ের অনুমতি লাভ করিয়া কৃষ্ণদাস র্তাহার প্রিয় শিষ্য মুকুন্দ দত্ত সমভিব্যহারে গ্রন্থের এক প্রতিলিপি বঙ্গে প্রেরণ করেন। পথিমধ্যে বা কুড়া বিষ্ণুপুরের রাজা বীর হাম্বীর ইহা লুণ্ঠন করেন। এই দুঃসহ সংবাদ শ্রবণ মাত্র শোকে আকুল হইয়া কৃষ্ণদাস ১৬১৫ খ্ৰীঃ অব্দে রাধাকুণ্ডে তমুত্যাগ করেন এবং সেইস্থানেই র্তাহাকে সমাহিত করা হয় । কষ্ণদাসজী—রামানন্দ পন্থী সাধক । অনন্তীনন্দ তাঁহার গুরু ছিলেন । হিমালয়ের অন্তঃপাতি কুলু দেশে তাহার জন্ম হয় । আমেরের রাজা পৃথীরাজ কৃষ্ণদাসের শিষ্য হইয়াছিলেন । অগ্রদল ও কলহ নামে কৃষ্ণদাসের দুই থাকুক, উহ নষ্ট করিতে প্রয়াস পান। | জন প্রধান শিষ্য ছিলেন।
