পাতা:জীবনীকোষ-ভারতীয় ঐতিহাসিক-দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫
ভারতীয়-ঐতিহাসিক
কমলকৃষ্ণ

মাহাত্ম্যে মুক্তিলাভ, আমি চাই না। যদি ভগবদ্ভক্তি থাকে, তবে সেই মূল্য দিয়াই আমি মগহর বাসেই মুক্তির অধিকারী হব।” কবীরের মৃত্যুর পর তাঁহার দেহের সৎকার লইয়া হিন্দু ও মুসলমান শিষ্যগণের মধ্যে ঘোরতর কলহের সৃষ্টি হয়। কিম্বদন্তী আছে যে তাঁহার দেহের আচ্ছাদন অপসারিত করিলে দেখা যায় যে, তথায় মৃতদেহের পরিবর্ত্তে কতকগুলি ফুল পড়িয়া আছে। সেই ফুল বণ্টন করিয়া হিন্দু শিষ্যগণ একভাগ কাশীতে লইয়া দাহ করেন এবং কাশীস্থিত কবীরচৌবা নামক স্থানে সেই ভস্ম সমাধিস্থ করেন। মুসলমান ভক্তগণ ফলের অপর অর্দ্ধাংশ মগহরেই কবর দিয়া রাখেন। তজ্জন্য ঐ উভয় স্থানই কবীরপন্থীদের তীর্থস্থান হইয়া রহিয়াছে।

কবীর, শেখ—তিনি দিল্লীর সম্রাট হুমায়ুনের সময়ের একজন বিখ্যাত ধার্ম্মিক লোক ছিলেন। আমীর হিন্দু বেগ ও তাঁহার পুত্র বাবা বেগ জলায়ির উভয়েই শেখ কবীরের শিষ্য ছিলেন। হুমায়ুন, বাবা বেগ জলয়িরকে জৌনপুরের প্রাদেশিক শাসনকর্ত্তার পদে নিযুক্ত করেন। তিনি জৌনপুরে আসিয়াই স্বীয় গুরু শেখ কবীরের জন্য শিক্ষামন্দির, ভজনালয় ও বাসস্থানের জন্ম একটা সুরম্য প্রাসাদ নির্ম্মাণ করিয়াছিলেন। এই সমস্ত অদ্যপি
বর্ত্তমান থাকিয়া, অতীত কাহিনী স্মরণ করাইয়া দিতেছে।

কমরউদ্দিন খাঁ—দিল্লীর সম্রাট মোহাম্মদ শাহের প্রধান মন্ত্রী। তিনি তুরাণ দেশের (তুর্কিস্থান) অধিবাসী ছিলেন। তাঁহার পিতা মোহাম্মদ আমীন খাঁ আওরঙ্গজীবের রাজত্বকালে ভারতবর্ষে আগমন করেন। তিনি তাঁহার পিতার জীবিতকালে গোসলখানার দেওয়ান ছিলেন। চিনক্লিস খাঁ দক্ষিণাত্যে চলিয়া গেলে, তিনিই মন্ত্রী পদে প্রতিষ্ঠিত হন। কিন্তু তিনি মন্ত্রী পদের উপযুক্ত ছিলেন না। আহাম্মদ শাহ আবদালীর সহিত যুদ্ধে তিনি নিহত হন। মন্ত্রী কমরউদিনের মৃত্যুর পরেও তাঁহার পুত্র মীরমন্নু প্রাণপণে যুদ্ধ করিয়ছিলেন। তাঁহারই বিক্রমে আহাম্মদ শাহ আবদালী যুদ্ধে পরাস্ত হইয়া, কান্দাহারে চলিয়া যাইতে বাধ্য হন। মোহাম্মদ শাহ এই বীরত্বের পুরস্কারস্বরূপ বহু খিলাতসহ তাঁহাকে লাহোর ও মুলতানের সুবাদারের পদে নিযুক্ত করেন।

কমলকৃষ্ণ দেব, মহারাজা—তিনি কলিকাতা শোভাবাজারের রাজা রামকৃষ্ণের ষষ্ঠ পুত্র। ১৮২০ খ্রীঃ অব্দে তাঁহার জন্ম হয়। তিনি তাৎকালীন হিন্দু কলেজে শিক্ষা লাভ করেন। তিনি সাহিত্যানুরাগীও ছিলেন। ‘গুণাকর’ ও ‘ভাস্কর’ নামে দুইখানি পত্রিকা তাঁহারই