পাতা:জীবনীকোষ-ভারতীয় ঐতিহাসিক-দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

AbrS) অরাজক অবস্থার সময়ে বিজয়মাণিক্য পরলোক গমন করেন এবং কৃষ্ণমাণিক্য সিংহাসন অধিকার করেন। কিন্তু সমসের গাজী নামক এক দসু্যপতি র্তাহাকে রাজ্যচ্যুত করিবার প্রয়াসী হন । তখন কৃষ্ণমাণিক্য উদয়পুর হইতে পলায়নপূর্বক বর্তমান আগড়তলায় আশ্রয় গ্রহণ করেন । উপায়ান্তর না দেখিয়া তিনি বঙ্গের নবাব মীরকাশিমের শরণাপন্ন হইলেন । নবাব মীরকাশিম, কৃষ্ণমাণিক্যের সাহায্যার্থ একদল সৈন্য প্রেরণ করেন। সেই সৈন্ত সমসের গাজীকে পরাজিত ও বন্দী করিয়৷ নবাব সমীপে উপস্থিত করিলে, নবাবের আদেশে সমসের গাজী তোপের মুখে জীবন বিসর্জন করিলেন। রাজদণ্ড ধারণ করিবার পূৰ্ব্বে মহারাজ কৃষ্ণমাণিক্যকে যেরূপ কষ্ট ভোগ করিতে হইয়াছিল, ত্রিপুর রাজ বংশের কেন, অপর রাজবংশীয় অতি অল্প লোকের ভাগ্যেই সেইরূপ ঘটিয়া ছিল । রাজদণ্ড ধারণ করিবার পরেই রাজস্ব সংগ্রাহক ফৌজদারের সহিত তাহার প্রথমে কলহ, পরে যুদ্ধ উপস্থিত হইল। ফৌজদার রাজাকে দমন করিবার জন্য নবাব সমীপে সৈন্ত প্রার্থনা করিলেন । নবাব ইংরেজ গভর্ণর বান্‌সিটার্ট সাহেবকে সৈন্তদ্বারা সাহায্য করিতে অনুরোধ করেন । তদনুসারে গভর্ণর চট্টগ্রামের সীমারেখা ভারতীয়-ঐতিহাসিক কৃষ্ণমাণিক্য প্রসারিত করিবার এই উত্তম সুযোগটী গ্রহণ করিতে খুবই অগ্রহান্বিত হইলেন । তিনি চট্টগ্রামের শাসনকৰ্ত্ত বারলেষ্ট সাহেবকে ত্রিপুরা অধিকার করিতে আদেশ দিলেন । তদনুসারে ইংরাজ সেনাপতি মথি ২০৬ জন পদাতিক ও দুইটী তোপ সহ ত্রিপুরার রাজধানী কৈলার গড় দুর্গের সমীপে উপস্থিত হইলেন । প্রবাদ এই যে মথি সাহেব প্রলোভনে একজন রাজকীয় প্রধান কৰ্ম্মচারীকে হস্তগত করিলেন । এই বিশ্বাসঘাতক রাজকীয় সৈন্তগণকে পলায়ন করিতে পরামর্শ দিল । রাত্রিকালে রাজকীয় সমস্ত সৈন্ত পলায়ন করিল। মহারাজ সেনাপতি মথির হস্তে আত্মসমর্পণ করিতে বাধ্য হইলেন । এইরূপে ত্রিপুরার সমতলক্ষেত্র ইংরেজ রাজ্যভুক্ত হয় (১৭৬২) । জগৎমাণিক্যের বংশধর বলরাম মাণিক্য তখন চাকলা রোসনাবাদের শাসনভার প্রাপ্ত হন । কিন্তু কৃষ্ণ মাণিক্য অল্পকাল পরেই বলরামকে তাড়াইয়। রোসনাবাদ পুন অধিকার করেন। মহারাজ কৃষ্ণমাণিক্য দাতা, দয়ালু, স্বধৰ্ম্মনিষ্ঠ নরপতি ছিলেন। কুমিল্লার সতর রত্ন মন্দির তাহার সময়ে নিৰ্ম্মিত হয় । সমসের গাজীর পরাজয়ের পর তাহার সমস্ত বিষয় মহারাজের অধিকারে আসিলেও, তিনি গাজীর প্রদত্ত নিস্কর বাজেয়াপ্ত করেন নাই। তাহার সৰ্ব্ব