পাতা:জীবনীকোষ-ভারতীয় ঐতিহাসিক-প্রথম খণ্ড.pdf/৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অশ্বিনীকুমার অধিকারী হইয়াছিলেন । পিতা ও আত্মীয় স্বজনের অনুরোধে তিনি কলিকী তা ছাড়িয়া বরিশালে ওকালতি করিতে আসিলেন । অনেকে তাহাকে কলিকাতা থাকিতে পরামর্শ দিয়াছিলেন ; এমনও বলিয়াছিলেন যে, এই স্থানে থাকিলে, কালে তিনি সমস্ত ভারতের অন্যতম নেতা হইতে পারিবেন । কিন্তু এই প্রলোভন তাহাকে মুগ্ধ করিতে পারিল না। তিনি স্বীয় জন্মভূমি বরিশালকেই কৰ্ম্মক্ষেত্র বলিয়া নিৰ্ব্বাচন করিলেন । সেই কালে বরিশালের নৈতিক আবহাওয়া বড় ভাল ছিল না । তিনি ঐ আবহওয়ার উন্নতি সাধনে সচেষ্ট হইলেন, বরিশালে অসিয়াই তিনি একদল ব্রাহ্মযুবকের সঙ্গে মিশিলেন । র্তাহাদের লইয়৷ কীৰ্ত্তন আলোচনা ও শাস্ত্রপাঠাদি আরম্ভ হইল । ব্রাহ্মসমাজে নিয়মিত বক্তৃতা ও আরম্ভ হইল। অল্পকাল মধ্যেই তিনি ‘পূৰ্ব্ববঙ্গেরকেশবচন্দ্র’ আখ্যা পাইলেন। এই সময়ে ব্রাহ্ম প্রচারক বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী মহাশয় বরিশালে আগমন করিলেন । বরিশাল যেন ভাঙ্গিয় পড়িল । অশ্বিনী কুমার তিনজনকে গুরু বলিয়া-মানিতেন কেশব চন্দ্র সেন, বিজয় কৃষ্ণ গোস্বামী ও পরমহংস রাম কৃষ্ণ uদব । ওকালতি অশ্বিনীকুমারের ভাল লাগিল না। ওকালতি করিতে হইলে জীবনী-কোষ ১৯২ বহু মিথ্যা কথা বলিতে হয় । সে স্কুন্ত ওকালতি একেবারে ছাড়িয়া দলেন । এই সময়ে বরিশালে রমেশ চন্দ্র দত্ত মহাশয় ম্যাজিষ্ট্রেট ছিলেন । তিনি জিলা স্কুল সমিতির সভাপতিও ছিলেন । অশ্বিনী কুমারকে তিনি কমিটীর সভ্য করিয়া লইলেন এবং জিলা স্কুলে সকল ছাত্রের স্থান হয় ন বলিয়, তাহাকে একটা স্কুল স্থাপন করিতে অনুরোধ করিলেন । তনি এই সুযোগে ওকালতি ছাড়িয়া স্কুল স্থাপন করিলেন । তৎপরে পিতার মৃত্যুর পরে ১৮৮৯ সালে পিতার নামে ব্রজমোহন কলেজ স্থাপন করেন এবং সুদীর্ঘ পাঁচশ বৎসর বিমা বেতনে তাহাতে কাজ করেন । কৰ্ম্মযোগী অশ্বিনীকুমার নিজের সমস্ত শক্তিকে ছাত্রদের উন্নতি কল্পে নিয়োজিত করিলেন । র্তাহীদের লইয়৷ কয়েকট দল গঠন করিলেন । এক একটা দলের এক এক প্রকার কাজ নির্দিষ্ট হইল। ছাত্রদের লইয়া যে আলোচনা হইত, তাহারই ফল স্বরূপ ‘ভক্তিযোগ’ ‘দুর্গোৎসবতত্ত্ব’ ‘প্রেম’ কৰ্ম্মযোগ, প্রভৃতি অমূল্য গ্রন্থ আমরা পাইয়াছি । কেবল ছেলেদের জন্য স্কুল কলেজ স্থাপন করিয়াই তিনি নিরস্ত হন নাই । ১৮৮৭ সালে মেয়েদের জন্য স্কুল স্থাপন করিলেন । সমস্ত জিলার স্ত্রীশিক্ষা প্রচারোদেণ্ডে ‘বাখর গঞ্জ হিতৈর্ষিণী সভা’ প্রতিষ্ঠিত হইল।