পাতা:জীবনী-কোষ - দ্বারকানাথ বসু.pdf/১৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নানক এই ঘটনায় ইহঁার পিতা অতি দুঃখিত ও কুপিত হইলেন । কালুবেদী ঘোর-সংসারী ছিলেন, পুত্রের সাধুভাব হৃদয়ে ধারণা করিতে পারিতেন না । সংসারী করিবার জন্ত ইহঁাকে শাসন করিতেন এবং কঠোর বাক্য প্রয়োগ করিতেও ক্রট করিতেন না। পিতার দুর্ব্যবহারে জালাতন হইয়া, এবং অন্তান্ত লোকের দ্যায় সংসারী না হইলে গৃহত্যাগ করিতে আদিষ্ট হইয়ুং, নানক বিংশতি বৎসর বয়সে তালবস্তী পরিত্যাগ পূৰ্ব্বক সুলতানপুরে ভগিনী নানকীর গৃহে গমন করেন। ভগিনী ও ভগিনীপতির দ্বারা উত্তেজিত হইয়া নানক একখানি মুদিখানার দোকান খুলিলেন । দোকানে বিলক্ষণ লাভ হইতে লাগিল । এই সময় নানকীর যত্নে ইহার উদ্বাহ-ক্রিয়া সম্পন্ন হইল । সুলক্ষণ নামী রমণীর পাণিগ্রহণ করিয়া ইনি সুলতানপুরে পৃথকৃ গৃহ নিৰ্ম্মাণ পূর্বক বাস করিতে লাগিলেন। ক্রমে ইহঁার দুইটী পুত্র জন্মগ্রহণ করে—জ্যেষ্ঠের নাম শ্ৰীচন্দ্র এবং কনিষ্ঠ লক্ষ্মীদাস । দ্বিতীয় পুত্রের জন্মের সময় ইহঁার মনে ধৰ্ম্মভাব অতি প্রবল হইয়াছিল । সৰ্ব্বকৰ্ম্ম পরিত্যাগ পূৰ্ব্বক ধৰ্ম্মার্থ জীবন বিসর্জন করিতে [ ১৪৩ ] নানক ইহঁার মন ধাবিত হয়। ক্রমে এই বেগ এত প্রবল হইল যে, ইনি আর সংসারে থাকিতে পারিলেন না । সংসারের মায়া আর ইহাকে বদ্ধ করিয়া রাখিতে পারিল না । যুবতী স্ত্রী, শিশু সন্তান, আত্মীয় স্বজন পরিত্যাগপূৰ্ব্বক নানক সপ্তবিংশতি বৎসর বয়সে সন্ন্যাসী হইলেন । সন্ন্যাসীর বেশে নানক দেশবিদেশে ভ্রমণ করিতে লাগিলেন। সৰ্ব্বত্রই ধৰ্ম্মের বাহভাব দর্শনে ইহঁার মন ক্ষুণ্ণ হইতে লাগিল। সুদুর আরব দেশ অতিক্রম পূৰ্ব্বক মক্কা নগরীতে পর্য্যন্ত ইনি পরিভ্রমণ করেন। কথিত আছে যে,ইনি তথায় একদা মসজিদের দিকে পদ রাখিয়া শায়িত ছিলেন । ইতিমধ্যে জনৈক মোল্লা তথায় উপস্থিত হইয়া ইহঁাকে তিরস্কার করেন। ইনি বিনীত ভাবে বলিলেন, “ যে দিকে পরমেশ্বর নাই সেই দিকে পদ সরাইয়া রাখুন”। মোল্লা নির্বাক হইলেন । নানাদেশে ভ্রমণ করিয়া কোথাও ধৰ্ম্মের শাস্তি না দেখিয়া, ক্ষুব্ধ হৃদয়ে নানক স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করিলেন । ধৰ্ম্মার্থ পরিভ্রমণের অসারত্ব উপলব্ধি করিয়া, পরিজন পরিত্যাগে ংসারের মায়া হইতে নিস্তার পাইবার সম্ভাবনা না দেখিয়া, এবং ধৰ্ম্মোপার্জনার্থ গৃহাশ্রমের