পাতা:জীবনী-কোষ - দ্বারকানাথ বসু.pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সময়ে ইহার বেতন সৰ্ব্বসমেত মাসিক পাচ শত টাকা । উচ্চ পদস্থ কৰ্ম্মচারীর সহিত অবনিবনায় ১৮৫৮ খৃষ্টাব্দে বিদ্যাসাগর মহাশয় কাৰ্য্য ত্যাগ করেন। অতঃপর ইহাকে স্বাধীন ভাবে উপার্জনের জন্ত সচেষ্ট হইতে হইল। বালক বালিকাদিগের পাঠ্য অনেক গুলি বাঙ্গালা ও সংস্কৃত পুস্তক প্রণয়ন করিয়! আয়ের সংস্থান করেন । উপক্রমণিকা ও ব্যাকরণকৌমুদী রচনা করিয়া ইনি সহজে সংস্কৃত শিক্ষায় পথ সুগম করেন। ইনি স্বীয় পুস্তক বিক্রয় দ্বারা বিলক্ষণ উপার্জন করিতেন এবং যাবজ্জীবন আর্থিক সুখে অতিবাহিত করিয়া গিয়াছেন । বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জীবনের প্রধান কাৰ্য্য বাল-বিধবাদিগের পুনর্বিবাহ-প্রথা প্রবর্তণ । ইনি একদা বীরসিংহে বাটীর চণ্ডীমণ্ডপে উপবিষ্ট আছেন, এমন সময়ে ইহার জননী একটা বালিকার বৈধব্য দুঃখ উল্লেখ করিয়া রোদন করিতে করিতে উপস্থিত হইয়া ইহাকে বলিলেন, “তুই এত শাস্ত্র পড়িলি তাহাতে বিধবাদের কোন উপায় আছে কি না ।” ইহার পিতৃদেবও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনিও বালবিধবাদের পুনর্বিবাহ শাস্ত্রসন্মত কি না জিজ্ঞাসা করেন। তাহাতে [ २७ ] ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বিদ্যাসাগর বলেন, “বেদ, স্মৃতি, পুরাণ পাঠ করিয়া আমার ধারণা হইয়াছে যে বালবিধবা-বিবাহ শাস্ত্রসন্মত। তবে সে সম্বন্ধে পুস্তক প্রণয়ন করিলে নানা লোকে নানারূপ কুৎসা ও কটু বাক্য প্রয়োগ করিলে, আপনারা দুঃখিত হইতে পারেন।” তখন ইহার পিতা বলিলেন, “আমরা উভয়ে একবাক্যে বলিতেছি এ বিষয়ে যাহা কিছু সহ্য করিতে হয়, তাহা করিব । পুস্তক প্রচারিত করিবার অগ্ৰে আর একবার ধৰ্ম্মশাস্ত্র ভাল করিয়া দেখিয়া প্রবৃত্ত হইবে। প্রবৃত্ত হইলে কিছুতেই পশ্চাৎপদ হইবে না, এমন কি আমরা তোমার পিতামাতা, আমরা নিবারণ করিলেও থামিবে না।” পিতামাতার আদেশে বিদ্যাসাগর বালবিধবা-বিবাহের জন্ত বদ্ধ-পরিকর হইলেন। ১৮৫৫ খৃষ্টাব্দে “বিধবা বিবাহ” নামক পুস্তক প্রণয়ন করেন। অতঃপর অকাতরে নিন্দা, অত্যাচার, বায়, অসুবিধা প্রভৃতি সহ করিয়া ব্রাহ্মণ, কায়স্থ, ও বৈদ্যদিগের মধ্যে অনেক গুলি বিধবার বিবাহ দেন। নিজের একমাত্র পুত্র নারায়ণচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়কেও একটী বিধবার সহিত বিবাহ দেন । ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়ই প্রথমে ভারতরাসী দ্বারা পরিচালিত