পাতা:জীবনের ঝরাপাতা.pdf/১৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 বড় হয়ে দেখলুম বাঙলার ললাটে প্রধান কলঙ্ক হচ্ছে কাপুরুষতার—সেইটিই মুছতে হবে। হাতে অস্ত্র ধরলেই ভীরুতা যায় না। কিন্তু অস্ত্রচালনার বিদ্যা জানা থাকলে ভরসা থাকে আততায়ীর শরীরে ঠিক কোন জায়গাটি বাঁচিয়ে কোন জায়গায় মারলে সে মরবে না, শুধু ঘা খেয়ে হতবল হবে। হয়ত তাতে মারপিটের দায়ে ধরা পড়তে হতে পারে, কিন্তু খুনের দায়ে নয়। এই ভরসাই সাহস দেয় অস্ত্রবিৎকে অস্ত্র চালাতে। কুকুরেরও দাঁত আছে, বেড়ালেরও নখ আছে, আক্রমণ করলে একটি পোকামাকড়ও কামড়ায়—শুধু বাঙালীই কি সাত চড়েও বা কাড়বে না? এত মনুষ্যত্বের অভাব তার চিরকাল? এত হীনতা?

 আর একটা জিনিস দেখলুম। হাতের ও মনের দুইয়ের একসঙ্গে ক্রিয়া চাই। লাঠি চালাতে শিখলেও মনের muscles-এর অকর্মণ্যতা অনেক দিন ধরে পুরুষানুক্রমে বাঙ্গালীর চলে এসেছে, সেটাকে সরিয়ে ঠেলে ফেলে মনকে কর্মপ্রমুখ করে কাজে ঝাঁপ দেওয়ানর অভ্যেস না করলে মনের হুকুম বিনা দরকারের সময় লাঠিবিদের হাত উঠবে না। বীরেরা বলেছিলেন—“বলং বলং বাহুবলং।” সঙ্গে সঙ্গে ধীরেরা শিখিয়েছিলেন-“ব্রহ্মতেজো বলং বলং।” অর্থাৎ মন ও শরীর পরস্পর পরস্পরের উপর প্রতিক্রিয়া করে। আমি ঝোঁকের মাথায় দিগ্বিদিকজ্ঞানশূন্য হয়েই আমার জাতিকে বলবীর্যে বলীয়ান করে গড়ে তোলার তৎপর হইনি। এ বিষয়ে ইংলণ্ডের বড় বড় মনীষী Educationist-দের মতেরও যথেষ্ট অনুসন্ধানপরায়ণ হয়েছিলুম। তাঁদের একজনের পুস্তকে পেলুমঃ—

 Physical weakness is a crime-against yourself and those who depend on you. Weaklings are despised and a weakling nation is doomed. The decline of ancient Greece and Rome which rapidly fell from the pinnacle of supreme civilization was due to physical neglect and abuse of the inflexible laws of Nature. A physically weak nation is drained out mentally, its feet are on the downward path and it will end upon the scrap-heap if it does not act before it is too late. To change from a weakling to a perfect man build yourself up, clear your befuddled brain and develop your muscles. The one great test of manliness is—courage, both mental and physical. Your mind alone is the maker of your physical future and your physical strength insures a high moral standard.

১৩৬