পাতা:জীবনের ঝরাপাতা.pdf/২১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

লাহোরের বাসিন্দা। তাঁহার চেষ্টায় সেখানে ইহার একটি শাখা গঠিত হয়, এবং উক্ত উদ্দেশ্যে কার্য হইতে থাকে। ক্রমে অমৃতসর, দিল্লী, করাচী, হায়দরাবাদ, কানপুর, বাঁকীপুর, হাজারীবাগ, মেদিনীপুর, কলিকাতা এবং আরও কয়েকটি স্থানে ভারত স্ত্রী-মহামণ্ডলের শাখা সমিতি স্থাপিত হইল।

 কলিকাতার ভারত স্ত্রী-মহামণ্ডলের শাখার কার্যকলাপ সম্বন্ধে এখানে বিশেষ ভাবে উল্লেখ করি। কৃষ্ণভাবিনী দাসের চেষ্টাযত্নে ইহা একটি প্রকৃত সমাজহিতৈষী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। অন্তঃপুরে বিধবা, কুমারী ও অনাথা নারীগণকে সাধারণ শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে শিল্পশিক্ষা দানেরও ব্যবস্থা হয়। তিনি ছিলেন বৌবাজারনিবাসী কলিকাতা হাইকোর্টের বিখ্যাত ব্যবহারাজীব শ্রীনাথ দাসের পুত্র অধ্যাপক দেবেন্দ্রনাথ দাসের সহধর্মিণী। পতি এবং একমাত্র কন্যার প্রাণবিয়োগের পর কৃষ্ণভাবিনী বিধবা অবস্থায় ভারত স্ত্রী-মহামণ্ডলের কার্যে নিজেকে একেবারে সঁপিয়া দিয়াছিলেন। তাঁহার ত্যাগপূত জীবন সকলেরই আদর্শস্থল। ১৯১৯ সনের প্রারম্ভে তাঁহার মত্যু হয়। তাঁহার মত্যু হইলে কবি প্রিয়ম্বদা দেবী ভারত স্ত্রী-মহামণ্ডলের সম্পাদিকা হইলেন। কয়েক বৎসর যাবৎ তিনিও ইহার কার্য সুচারূরূপে সম্পাদন করিয়াছিলেন। সরলা দেবী বঙ্গদেশে ফিরিয়া আসিলে ইহার পরিচালনাভার স্বহস্তে গ্রহণ করেন। এ সম্বন্ধে পরে বলিতেছি।

 পত্রিকা সম্পাদন ও পরিচালন: ‘ভারতী’ সম্পাদনে প্রযত্নের কথা সরলা দেবী আত্মজীবনীতেই বিবৃত করিয়াছেন। সাময়িক পত্র সম্পাদনে তাঁহার সাফল্যপূর্ণ বহুমুখী প্রয়াস সম্বন্ধে পাঠক-পাঠিকামাত্রেই হয়ত অবগত হইয়াছেন। সরলা দেবী রাজনীতিতে ছিলেন উগ্রপন্থী; বিপ্লবযুগের প্রথম দিকে বিপ্লবী ভাবধারার পরিপোষক কার্যেও নিজেকে নিয়োজিত করিয়াছিলেন। পণ্ডিত রামভজ দত্তচৌধুরীও উগ্রপন্থী রাজনীতিক ছিলেন। কাজেই এদিকেও উভয়ের যোগাযোগ পূর্ণমাত্রায় ঘটিয়াছিল। পণ্ডিত রামভজও গতানুগতিক রাজনৈতিক আন্দোলনের সমর্থক ছিলেন না। রাজনীতি-ক্ষেত্রে নবভাব প্রচারের নিমিত্ত তিনি হিন্দুস্থান নামক উর্দু সাপ্তাহিক প্রকাশ করেন। ইহার সম্পাদকও ছিলেন তিনি। এই সময় সরলা দেবীর পূর্ব অভিজ্ঞতা রামভজের বিশেষ কাজে আসে।

 ‘হিন্দুস্থান’ পত্রিকায় উগ্র রাজনৈতিক মতামত প্রকাশের নিমিত্ত

১৯৭