সময় আমরা স্বদেশ-বিদেশ নিরপেক্ষ হইয়া যেখান হইতে যে জ্ঞান পাওয়া যায়, তাহাই নত মস্তকে গ্রহণ করিব। কিন্তু ভালোচনার সময় আমরা স্বদেশীয় ভাবকেই বিশেষ স্নেহ দৃষ্টিতে দেখিব।”
‘ভারতী’ দীর্ঘকাল স্থায়ী হইয়াছিল। শ্রেষ্ঠ লেখকগণের রচনা দ্বারা ইহা সমৃদ্ধ হয়। দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর ইহার প্রথম সম্পাদক। কার্যকালসহ বিভিন্ন সম্পাদকের নাম এখানে দেওয়া হইল:
সুধীদাদা: সুধীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬৯-১৯২৯) দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরের চতুর্থ পুত্র। তিনি সুশিক্ষিত ও সুসাহিত্যিক। অগ্রহায়ণ ১২৯৮ হইতে ‘সাধনা' পত্রিকা প্রকাশিত হয়। সুধীন্দ্রনাথ প্রথম তিন বৎসর ইহা সম্পাদনা করেন। চতুর্থ বৎসরে রবীন্দ্রনাথ ইহার সম্পূর্ণ ভার লন। রবীন্দ্রনাথ লিখিয়াছেন:
“সাধনা পত্রিকার অধিকাংশ লেখা আমাকে লিখিতে হইত এবং অন্য লেখকগণের রচনাতেও আমার হাত ভূরি পমািণ ছিল।”
সুধীন্দ্রনাথ আজীবন সাহিত্য-সাধনা করিয়া গিয়াছেন। অমায়িক ব্যবহারের জনা তিনি সকলের প্রিয় হইয়াছিলেন।
বলু: বলেন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৭৫-১৮৯৯) মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের চতুর্থ পুত্র বীরেন্দ্রনাথ ঠাকুরের (১৮৪৫-১৯}} একমাত্র সন্তান। তিনি বাংলা সাহিত্যে সুপরিচিত। রবীন্দ্রনাথ বলেন্দ্রনাথকে লইয়া ১৮৯৯ সানে একটি স্বদেশী ভাণ্ডার খুলেন। বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ্, সম্প্রতি বলেন্দ্র-বচনাবলী প্রকাশ করিয়াছেন। তাঁহার রচনার সাহিত্যিক মূল্য সর্বজনস্বীকৃত।
মেজ মামী: জ্ঞানদানন্দিনী দেবী (১৮৫২-১৯৭১)। মহর্ষির মধ্যম পুত্র সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সহধর্মিণী। যশোহর জেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামে জ্ঞানদানন্দিনীর জন্ম হয়। তাঁহার পিতার নাম অভয়াচরণ মুখোপাধ্যায়। ১৮৫৯ সনে স্যন্দ্রনাথের সঙ্গে তাঁহার বিবাহ হয়। সত্যেন্দ্রনাথের শিক্ষা ও সহযোগিতায় জ্ঞানদানন্দিনী ক্রমে সু-শিক্ষা ও স্বাধীনতার পক্ষপাতী হইয়া উঠেন। ঠাকুরবাড়ির অন্তঃপুরে বসিয়া তিনি বাংলা ও ইংরেজী ভাষা আয়ত্ত করেন। তিনি বাংলাদেশে কতকগুলি নতুন প্রথার সূচনা করেন, তন্মধ্যে দুইটি প্রধান: ১। জন্মদিন পালন এবং ২। নতন ধরনে শাড়ি পরা। শাড়ি পরার নতুন রীতি প্রবর্তন সম্পর্কে তিনি স্বামীর কর্মস্থল