পাতা:জীবনের ঝরাপাতা.pdf/২৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সদুপায়ে উপার্জনক্ষম হন। সেবাব্রতের এই আশ্রমটি চল্লিশ বৎসর জীবিত ছিল। এই সময়ের মধ্যে তিনি চল্লিশটি বিধবা বিবাহ দিতে সক্ষম হন। তাঁহার যাবতীয় সম্পত্তি তিনি দান করিয়া যান।

 বিধবা-শিল্পাশ্রম: সরলা দেবী এই আশ্রমের উদ্ভব সম্বন্ধে গ্রন্থে বলিয়াছেন। আশ্রমটি সখিসমিতির অনুক্রম। সখিসমিতির উদ্দেশ্য সঞ্জীবিত রাখিবার জন্য স্বর্ণকুমারী দেবীর জ্যেষ্ঠা কন্যা হিরন্ময়ী দেবী ১৯০৬ সনে রুপান্তরিত আকারে বিধবা-শিল্পাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। মৃত্যুকাল (১৯২৫) পর্যন্ত তিনি ইহা পরিচালনা করিয়া গিয়াছেন। তাঁহার মত্যুর পর ইহা 'হিরন্ময়ী বিধবা-শিম্পাশ্রম' নাম পরিগ্রহ করে। অতঃপর স্বর্ণকুমারী দেবীর অধ্যক্ষতায় ইহা পরিচালিত হয়। আশ্রমের অধ্যক্ষ সভার নাম ‘সখি-শিল্পসমিতি'।

॥ দশ॥

 বড়মামা: দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৪০-১৯২৬)। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের জ্যেষ্ঠ পুত্র। শৈশবে কিছুকাল হিন্দু কলেজে ও প্রেসিডেন্সী কলেজে শিক্ষালাভ করেন। কাব্য, দর্শন, গণিত ও সঙ্গীতে তাঁহার অসামান্য প্রতিভা ছিল। দেবেন্দ্রনাথের ধর্মনিষ্ঠতা ও স্বাদেশিকতা তাঁহার মধ্যে পূর্ণমাত্রায় বিরাজিত ছিল। তিনি আদি ব্রাহ্মসমাজের সঙ্গে অতি ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন। বহু স্বাদেশিক প্রতিষ্ঠানেরও তিনি মূলে ছিলেন। নবগোপাল মিত্রের হিন্দু মেলা (১৮৬৭), বেঙ্গল থিয়সফিক্যাল সোসাইটি (১৮৮২), বঙ্গীয় সাহিত্য-পরিষদ্ (১৮৯৪) প্রভৃতির সঙ্গে প্রতিষ্ঠাবধি যুক্ত হন। তিনি বেঙ্গল থিয়সফিক্যাল সোসাইটির সহকারী সভাপতি হইয়া-ছিলেন। বঙ্গীয় সাহিত্য-পরিষদের সভাপতির পদ অলংকৃত করেন তিন বৎসর যাবৎ (১৮৯৭-১৯০৫)। ১৩২০ সনে বঙ্গীয় সাহিত্য সম্মেলনের কলিকাতা অধিবেশনে সভাপতি পদে বৃত হন। তিনি বাংলা শর্টহ্যাণ্ডেরও উদ্ভাবক। দ্বিজেন্দ্রনাথ 'ভারতী'র প্রথম সম্পাদক (শ্রাবণ ১২৮৪-১২৯০)। ইহার পর দীর্ঘ পঁচিশ বৎসর যাবৎ (তিনি 'তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা' সম্পাদনায় ব্যাপক ছিলেন। 'হিতবাদী' প্রতিষ্ঠায় দ্বিজেন্দ্রনাথের প্রযত্ন উল্লেখযোগ্য) তিনিই উহার এই নামকরণ করেন। “হিতং মনোহারি চ দুর্লভং বচঃ”-হিতবাদীর মটোটি তাঁহারই প্রদত্ত। বাংলা সাহিত্য সাধনায় দ্বিজেনাথ আজীবন রত ছিলেন।

 দ্বিজেন্দ্রনাথের আট পুত্র এবং দুই কন্যা। চতুর্থ পুত্র সুধীন্দ্রনাথ এবং দুই কন্যা সরোজা দেবী ও ঊষা দেবীর কথা পুস্তকে উল্লিখিত হইয়াছে। সরোজা দেবীর ও ঊষা দেবীর বিবাহ হয় যথাক্রমে মোহিনীমোহন চট্টোপাধ্যায় ও রমণীমোহন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে।

 সেজ মাসীমা: শরৎকুমারী (১৮৫৫-১৯২০)

 ছোট মাসীমা: বর্ণকুমারী (১৮৫৮–;}

॥ এগার॥

 আশু, চৌধুরী: সার্, আশুতোষ চৌধুরী (১৮৫৯-১৯২৪)। পাবনা জেলার হরিপুরে বিখ্যাত জমিদার বংশে তাঁহার জন্ম। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া ইংলণ্ডে গমন করেন। তিনি ব্যারিস্টার হইয়া কলিকাতায়

২২২
২২২