সেদিন মাতার সভায় এই সত্যটাকে প্রকাশ করিয়াছিলাম। ইহাতে প্রমাণ হইয়াছিল যাহাকে দেখিতে ছোটো সেও হয়তো নিতান্ত কম বড়ো নয়। আমাদের পাঠ্যব্যাকরণে কাব্যালংকার অংশে যে সকল কবিতা উদাহৃত ছিল তাহাই মুখস্থ করিয়া মাকে বিস্মিত করিতাম। তাহার একটা আজও মনে আছে।
ওরে আমার মাছি।
আহা কী নম্রতা ধর, এসে হাত জোড় কর,
কিন্তু কেন বারি কর তীক্ষ্ণ শুঁড়গাছি!
সম্প্রতি প্রক্টরের গ্রন্থ হইত গ্রহতারা সম্বন্ধে অল্প যে একটু জ্ঞানলাভ করিয়াছিলাম তাহাও সেই দক্ষিণবায়ুবীজিত সান্ধ্য-সমিতির মধ্যে বিবৃত করিতে লাগিলাম।
আমার পিতার অনুচর কিশোরী চাটুর্জ্যে এককালে পাঁচালির দলের গায়ক ছিল। সে আমাকে পাহাড়ে থাকিতে প্রায় বলিত—আহা দাদাজি, তোমাকে যদি পাইতাম তবে পাঁচালির দল এমন জমাইতে পারিতাম সে আর কী বলিব। শুনিয়া আমার ভারি লোভ হইত—পাঁচালির দলে ভিড়িয়া দেশদেশান্তরে গান গাহিয়া বেড়ানোটা মহা একটা সৌভাগ্য বলিয়া বোধ হইত। সেই কিশোরীর কাছে অনেকগুলি পাঁচালির গান শিখিয়াছিলাম “ওরে ভাই জানকীরে দিয়ে এসো বন,” “প্রাণ তো অন্ত হল আমার কমল-আঁখি”, “রাঙা জবায় কি শোভা পায় পায়”, “কাতরে রাখো রাঙা