পাতা:জীবন-স্মৃতি - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৩৪৮).pdf/২৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বঙ্কিমচন্দ্র
২৬৩

আমার পক্ষে উপহারস্বরূপ ছিল; তখন আমি কলভাষার কবি বলিয়া উপাধি পাইয়াছি; তখন বিদ্যাও ছিল না, জীবনের অভিজ্ঞতাও ছিল অল্প, তাই গদ্য পদ্য যাহা লিখিতাম তাহার মধ্যে বস্তু যেটুকু ছিল ভাবুকতা ছিল তাহার চেয়ে বেশি, সুতরাং তাহাকে ভালো বলিতে গেলেও জোর দিয়া প্রশংসা করা যাইত না। তখন আমার বেশভূষা ব্যবহারেও সেই অর্ধশূটতার পয়িচয় যথেষ্ট ছিল; চুল ছিল বড়ো বড়ো এবং ভাবগতিকেও কবিত্বের একটা তুরীয় রকমের শৌখিনতা প্রকাশ পাইত; অত্যন্তই খাপছাড়া হইয়াছিলাম, বিশ সহজ মানুষের প্রশস্ত প্রচলিত আচার আচরণের মধ্যে গিয়া পৌঁছিয়া সকলের সঙ্গে সুসংগত হইয়া উঠিতে পারি নাই।

 এই সময়ে অক্ষয় সরকার মহাশয় “নবজীবন” মাসিকপত্র বাহির করিয়াছেন—আমি ও তাহাতে দুটা একটা লেখা দিয়াছি।

 বঙ্কিমবাবু তখন বঙ্গদর্শনের পালা শেষ করিয়া ধর্মলোচনায় প্রবৃত্ত হইয়াছেন। “প্রচার” বাহির হইতেছে। আমিও তখন প্রচার-এ একটি গান ও কোনো বৈষ্ণব পদ অবলম্বন করিয়া একটি গদ্য ভাবোচ্ছ্বাস প্রকাশ করিয়াছি।

 এই সময়ে কিংবা ইহারই কিছু পূর্ব হইতে আমি বঙ্কিম বাবুর কাছে আবার একবার সাহস করিয়া যাতায়াত করিতে আরম্ভ করিয়াছি। তখন তিনি ভবানীচরণ দত্তর স্ট্রীটে বাস করিতেন। বঙ্কিমবাবুর কাছে যাইতাম বটে কিন্তু বেশি