পাতা:জীবন-স্মৃতি - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৩৪৮).pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
জীবন-স্মৃতি

করিতেছেন। আমি কেবলি সুর চড়াইয়া বলিতে লাগিলাম, আরো সিঁঁড়ি, আরো সিঁড়ি, আরো সিঁড়ি; শেষকালে যখন বুঝা গেল সিঁড়ির সংখ্যা বাড়াইয়া কোনো লাভ নাই তখন স্তম্ভিত হইয়া বসিয়া ভাবিতে লাগিলাম এবং মনে করিলাম এটা এমন একটা আশ্চর্য খবর যে পৃথিবীতে যাহারা মাস্টার-মশায় তাহারাই কেবল এটা জানেন আর কেহ নয়।


ভৃত্যরাজক তন্ত্র

 ভারতবর্ষের ইতিহাসে দাসরাজাদের রাজত্বকাল সুখের কাল ছিল না। আমার জীবনের ইতিহাসেও ভৃত্যদের শাসনকালটা যখন আলোচনা করিয়া দেখি তখন তাহার মধ্যে মহিমা বা আনন্দ কিছুই দেখিতে পাই না। সকল রাজাদের পরিবর্তন বারংবার ঘটিয়াছে কিন্তু আমাদের ভাগ্যে সকল তাতেই নিষেধ ও প্রহারের ব্যবস্থার বৈলক্ষণা ঘটে নাই। তখন এ-সম্বন্ধে তত্ত্বালোচনার অবসর পাই নাই~-পিঠে যাহা পড়িত তাহা পিঠে করিয়াই লইতাম এবং মনে জানিতাম সংসারের ধর্ম ই এই—বড়ো যে সে মারে, ছোটো যে সে মার খায়। ইহার বিপরীত কথাটা, অর্থাৎ, ছোটো যে সেই মারে, বড় যে সেই মার খায়—শিখিতে বিস্তর বিলম্ব হইয়াছে।