পাতা:জীবন-স্মৃতি - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৩৪৮).pdf/৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭২
জীবন-স্মৃতি

খাইতে খাইতে অল্প খাওয়াই আমার চিরকালের মতো অভ্যস্ত হইয়া গিয়াছে। সেদিন আমার আহারে সংকোচ দেখিয়া দর্শকেরা সকলেই বিস্ময় প্রকাশ করিল। যেরূপ সুক্ষ্মদৃষ্টিতে সেদিন সকলে নিমন্ত্রিত বালকের কার্যকলাপ নিরীক্ষণ করিয়া দেখিল তাহা যদি স্থায়ী এবং ব্যাপক হইত তাহা হইলে বাংলা দেশে প্রাণিবিজ্ঞানের অসাধারণ উন্নতি হইতে পারিত।

 ইহার অনতিকাল পরে পঞ্চমাঙ্কে জাদুকরের নিকট হইতে দুই একখানা অদ্ভুত পত্র পাইয়া সমস্ত ব্যাপারটা বুঝিতে পারিলাম। ইহার পরে যবনিকা পতন।

 সত্যর কাছে শােনা গেল একদিন আমের আঁটির মধ্যে জাদুপ্রয়ােগ করিবার সময় সে প্রােফেসরকে বুঝাইয়া দিয়াছিল যে বিদ্যা শিক্ষার সুবিধার জন্য আমার অভিভাবকেরা আমাকে বালকবেশে বিদ্যালয়ে পাঠাইতেছিলেন কিন্তু ওটা আমার ছদ্মবেশ। যাহার স্বকপােলকল্পিত বৈজ্ঞানিক আলােচনায় কৌতূহলী তাহাদিগকে একথা বলিয়া রাখা উচিত, লাফানাের পরীক্ষায় আমি বঁ পা আগে বাড়াইয়া-ছিলাম—সেই পদক্ষেপটা যে আমার কত বড়াে ভুল হইয়াছিল তাহা সেদিন জানিতে পারি নাই।

_____