পাতা:জীয়ন্ত - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তাকে তুলে রেখে দেবার কাজ আমাদের নয়, আমাদের কাজ বৰ্ত্তমানে। মেয়েদের কথা ভেবে চোখের জলে বোমা বারুদ ভেজাবার সময় আমাদের নেই। যারা কাব্য করে ওটা তারাই করুক। অমিতাভ বলে, প্ৰতিমার সঙ্গে শেষ বোঝাপড়াই করে এসেছিলাম কালীদা। কালীনাথের কথার ধারে আহত হয় অমিতাভ, একটু আশ্চৰ্য্যও বোধ করে সেই সঙ্গে। মেয়েদের সম্পর্কে বিধিনিষেধের আসল কারণ তার জানা ছিল অন্য, সাধকের দেহমানে ব্ৰহ্মচৰ্য্য পালনের পুরনো সংস্কার, নারীকে নরকের দ্বার মনে করে চলার জের। এরকম সোজাসুজি বাস্তব একটা হিসােবও যে আছে কালীনাথের সেটা অমিতাভের ধারণা ছিল না। হিসাবটা উড়িয়ে দেবার মত নয়। আজ কোনমতেই নয়। একদিন অসময়ে একটি ছেলে আর মেয়েকে পথ চলতে চলতে ভাঙ্গা পুলে দাড়িয়ে কথা বলতে দেখা গিয়েছিল শুনে অশ্লীলতার তুলে ভানছে শহরের জিভ। দেশের জন্য ছেলেটির প্রাণ দেবার আর কি বিশেষ কোন মূল্য থাকবে লোকের কাছে ? কেউ কি উদ্ধৃদ্ধ হবে ? কালীনাথ বলে, এখনো উপায় আছে, এখনো সামলানো যায়। কি করে ? সাগ্রহে অমিতাভ জিজ্ঞাসা করে। এই মুহূৰ্ত্ত থেকে শক্ত হও, সমস্ত যোগাযোগ ছেড়ে দাও পিতুর সঙ্গে। সব ঠিক হয়ে যাবে, একটিবারও যদি তোমাদের কাছাকাছি না দেখা যায়। আস্তে আস্তে গুজব ঝিমিয়ে পড়বে, মরে যাবে। যাবে কি ? কে জানে ! কালীনাথ প্রতিমার দূর সম্পর্কের মামা। অথচ প্রতিমার দিকটা সে ভাবছে না । পিতুর দিক ? ভাবনা তো ওকে নিয়েই। এ কেলেঙ্কারি ভুলবে না কেউ । আমার বেলা হয়তো উদারভাবে তুচ্ছ করে দেবে, কিন্তু পিতুকে রেহাই দেবে না। সবার কাছে ওর পরিচয় কি হবে জানো কালীদা ? আমি শাসটুকু চেঁছে খেয়ে ছিবড়ে ফেলে দিয়েছি। এখন সবটা রসালো মজার ব্যাপার, সবাই বিয়ের দিন গুণছে, যেই আমি ছিটকে সরে যাবে SSV