পাতা:জীয়ন্ত - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কি বলেছে তাই নিয়ে ? ওরা একদিন রাজা ছিল এদেশে, ওদের গা জ্বালা করে না কেন, ইংরেজ না তাড়িয়ে ঘুমোয় কি করে ? আপনি উণ্টো পাণ্টো কথা বলছেন, অমিতাভ বলে, গত আন্দোলনে ওরা যোগ দিয়েছে। নিরামিষ আন্দোলন । কান্নাকাটি উপোস করার আন্দোলন ! মেঘেন মুখ বাকায়। এটা তাদের সকলেরই মনের কথা। আন্দোলনটার বিরাটত্বের জন্য কিছুকাল আগে পৰ্যন্ত মনে যে কিন্তু কিন্তু ভাবটুকু ছিল তাদের, তাও দ্রুত উপে ষোতে আরম্ভ করেছে। বরং দেশের এক প্ৰান্ত থেকে আর এক প্ৰান্ত পৰ্য্যন্ত দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে যে অভূতপূৰ্ব সাড়া জাগার জন্য আন্দোলনটার বিরাটত্ব, আন্দোলনের ব্যর্থতা বিরুদ্ধ মনোভাবটাই উগ্র করে তুলেছে। আমরা ওদের টানবার চেষ্টা করি না বলেই হয়তে ওরা আসে নি। আমরা হিন্দু ছেলেই দলে টানি-আমাদের কে টেনেছিল ? শুধু আমাদেরই কেন মাথা ব্যথা ? আমাদের ধর্মে, আমাদের সভ্যতায় এমন বিশেষ কিছু না। যদি থাকবে এতকাল ধরে শুধু আমাদেরই বোমার দল হত না কালীনাথ । এসব কথা তলিয়ে কেউ ভাবে নি, বুঝবার চেষ্টা করে নি কোন দিন। আজ কিনা তাদের সতেরোই তারিখের অনেক কষ্টের আয়োজন বাতিল হয়ে যেতে বসেছে হিন্দু-মুসলমানের দাঙ্গায়, আজ কিনা কথা উঠেছে বিপ্লবীর ধৰ্ম্মবিশ্বাসের, আজ এই ভয়ঙ্কর প্রকাও বাস্তব সত্যটা রূঢ়ভাবে প্রকট হয়ে উঠেছে যে হিন্দু-মুসলমানের এ দেশটার জন্য সশস্ত্র বিদ্রোহের দল গড়ছে শুধু হিন্দু! কল্পনায় আর পরিকল্পনায় আছে অনেক কিছু, দেশের যে যুবশক্তির ব্যাপক বিদ্রোহের আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যাবে ইংরেজের শাসন তার জাত ধৰ্ম্ম প্ৰদেশ থাকবে না, স্বাধীনতা আসবে না বিশেষভাবে এর জন্য অথবা ওর জন্য,-কিন্তু আগুন জালাবার ভূমিকা তো শুধু তাদেরই দাড়িয়েছে। কেন এমন হয় ? কি মানে এই অসঙ্গতির ? অস্পষ্ট জিজ্ঞাসার অসীম গুরুত্ব অনুভব করে তাদের হৃদয় উতলা হয়, মনে হয় জীবন দিতে এগিয়েও অনেক কিছু ভাবা হয় নি। জীবন এত বৃহৎ, এমন ব্যাপক আর সামঞ্জস্য-বিরোধিতায় এত বেশী Sèd