পাতা:জীয়ন্ত - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে। চিঠি আর দরখাস্ত লেখবার জন্য অনেকে আসে, বাড়ীতে ডাকে। পাচুর হাতের লেখা মুক্তার মত সুন্দর, চিঠি লিখতে এক পয়সা ও দরখাস্ত লিখতে দু’পয়সা মজুরি নেয় পাঁচু। লেখাপড়া শিখতে অনেক খরচ, बg कीछेद्र प्रश्नों श्रद्धा । পরীক্ষার খরচ যোগাতে পাচুর মার একটি গয়না গেছে। রূপের গয়না, ওইটিই তার শেষ সম্বল ছিল। পরীক্ষা দিয়েই যেমন তেমন সাময়িক একটা চাকরি করার সাধ ছিল পাচুর, ধনদাস রাজী হয় নি। তাছাড়া, চাকরিই বা কোথায় । তার চেয়ে ঢের বেশি পাস করা ঢের ছেলে বেকার বসে আছে। দেশের হালচাল বড় খারাপ। অনেককাল চাকরি করছে এমন অনেকের চাকরি। পৰ্য্যন্ত খসে যাচ্ছে । আর কি লেখাপড়া হবে ? মাঝে মাঝে এ ভাবনাটা পাচুর মনে আসে, তেমন জোরালো আকাজক্ষার রূপে নয়। লেখাপড়া শিখে বড় হবার উগ্র উচ্চাকাজক্ষা তার জন্য নয়, ওসব কামনার শিকড় তার জীবনেও গভীর স্তরে পশে না, রস পেয়ে পুষ্ট হয় না। জজ ম্যাজিস্টর অন্য জগতের জীব, অন্য জগতের জীবনের সার্থকতা, তার জগতের নয়। লেখাপড়া শিখে জজ ম্যাজিস্টর হওয়ার সাধ বা স্বপ্ন তার জগতে এত কৃত্রিম যে রাজা হওয়ার আশীৰ্বাদটা বরং ঢের বেশি বাস্তব আর স্বাভাবিক শোনায় । তবে কলেজে পড়ার ইচ্ছা পাচুর হয়। পাস করে পাকা নিশ্চয় কলেজে ভরতি হবে। পাকার সঙ্গে পড়তে পেলে মন্দ হয় না। কিন্তু তাতেও ওই জগতান্তরিত হবার দরকার থাকার অসুবিধা। কলেজে পড়তে এদিকে বাপখুড়োকে প্ৰায় সর্বস্বান্ত হতে হবে। যেমন আশা করেছিল, পরীক্ষা তত ভাল হয় নি, পাঁচ-দশ টাকা বৃত্তি যদি পাওয়াও যায়, বাড়ীর অবস্থা কাহিল হওয়া তাতে ঠেকবে না। তার চেয়ে বড় কথা, ওরকম সর্বস্ব পণ করে লেখাপড়া শিখতে গেলে শুধু আর একটা পাস করে থেমে যাওয়ার মানে হয় না। ম্যাটিক পৰ্যন্ত পড়ে শেষ করা যায়, চাকা এক পাক ঘূৱল, তার সমাজ সংসারে গণ্য হওয়ার মত মূল্য বাড়ল। চাকা আবার ঘোরালে অন্তত বি-এ S'