পাতা:জীয়ন্ত - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গায়ে দৃষ্টান্ত আছে, মেজকৰ্ত্তার নিজের নজর পড়েছিল ঘোষেদের বিনিম্ন ওপর। কি হল কি এল কি গেল দুদিন ভাল ঠাহর হল না, কোথায় রইল মোজকৰ্ত্তার শখ, কোথায় রইল বিনি, সমাজ গেল ধৰ্ম্ম গেল। বিনি। আজ ঘুটেকুড়েনীর বাড়া। বড় ক্ষণস্থায়ী বড়রা এই চোখের পিৱিতি, হয়তো তিন রাত্রি মিলন সইবে না, বিষিয়ে যাবে। হেমন্তের মনে হবে, কেমন যেন পচা পচা গন্ধ দুকলির গাৱে, খসখসে চামড়া, ভেঁাতা। হাবা কথা, টনটনে আদায়ের বুদ্ধি। বাবুদের ছেলেমেয়ের ফাকা পিরিত তবু দুটো মাস একটা বছর চলে।” তবে ফাকিতে দাড়ায়, চাষীর মেয়ে বাবুর ছেলের দুদিনের বেশি ভর সয় না। মেয়েপুরুষের তফাৎ শুধু নয়, আকাশ-পাতাল তফাৎ। খিদের সময় যেমন ইসটা মুরগিটা দেখে প্ৰাণটা হঠাৎ চনচনিয়ে ওঠে, দুকলিকে দেখে মেজকৰ্ত্তার ছেলের হয়েছে তাই, এ ফাদে ধরা দেওয়াটা উচিত হবে না। হেমন্ত এসে শুনল, দুকলি মামাবাড়ী গেছে। কদিন বাদেই এসবে আজ্ঞে ।-ভয়ে ভয়ে গণেশ জানাল। কি নির্লজ্জ বীভৎস হিংসা বংশানুক্ৰমিক জমিদারের । একেবারে তো প্ৰত্যাখ্যান করে নি, মুখে লাথি মেরে তো জবাব দেয় নি জঘন্য প্ৰস্তাবের, আচমকা আত্মসমর্পণ করতে ভরসা না পেয়ে ছল করে দুদিন শুধু সময় চেয়ে নিয়েছে। শুধু এই জন্য এমন দিশেহারা অত্যাচার। মনগড়া অপরাধের দায়ে গণেশকে বেঁধে এনে বেদম মার, মহাজন ত্ৰৈলোক্যকে দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে জমি বে-দখলের মামলা রুজুর শাসনি, গভীর রাত্রে লোক পাঠিয়ে হানা দিয়ে ভাঙা ঘর দুয়ার তছনছ করা ! এসব কি তবে দুকলির জন্যে, বাল্যবিধবা কচি চাষাড়ে মেয়েটার জন্য হেমন্তের উন্মাদ ভালবাসার প্রমাণ ? আগের দিন চোখে দেখে পরের দিন হাত ধরে টেনে এতই সে ভালবেসে ফেলেছে মেয়েটাকে যে কলকাতার উচ্চশিক্ষা ভুলে ভালবাসার নিয়মকানুন ভুলে যে ভাৰে হোক মেয়েটাকে পাওয়ার জন্য যাচ্ছেতাই কাণ্ড আরম্ভ করেছে ? পড়ার নকুল দাস, আগে সে পুলিসের জমাদার ছিল, এখন বুড়ে বয়সে R 308