পাতা:জীয়ন্ত - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেয়। বাশবনের সেই দুৰ্গম নির্জন স্থানটিতে পৌছে পাচু দেখতে পায় কয়েক হাত জায়গা সাফ করে একটি চাটাই বিছিয়ে রাখা হয়েছে, কাছে আছে একটি সর-চাপা মাটির কলসি । দুকলি বলে, চুপি চুপি জায়গাটা খুজে রেখেছি, বাড়ীতেও বলি নি। মুখপোড়া এলে টুক করে পালিয়ে এসে লুকিয়ে রাইতাম । ছোট ছোট নিশ্বাস ফেলে দুকলি। পাচু অভিভূত হয়ে থাকে। এবার তার দুকলির কাছে নিজেকে ছোট মনে হয়, একটা মেয়ের কাছে ! এসে মোরা বসি । চাটাইয়ে বসে হেসে কেঁদে কত কথাই দুকলি তাকে বলে, রাত্ৰিবেলা ভয়ে আঁৎকে আঁৎকে ওঠার কথা বলতে বলতে সে গা ঘেষে আসে। পাচুর। জগৎ-সংসার যখন তার ঘাড় মটকে দিতে উদ্যত হয়েছে, একজনকে খুঁজে পায় নি ভরসা করে যার মুখের দিকে তাকাতে পারে, তখন একা সে সাপখোপের এই ভয়ানক জঙ্গলে আত্মগোপনের স্থানটি খুজে বার করেছিলআজ এখন সেইখানে সে বন্ধু পেয়েছে। একজন, পৃথিবীতে তার একমাত্র আপনজন ! কিশোর প্রাণের অতল কৃতজ্ঞতায় কখন সে পাচুর গলা জড়িয়ে ধরে । পাচু সাহস দিয়ে বলে, ভয় কি, আমি তো আছিা! তাই বটে। চাষার ছেলে পাচু থাকতে রাজপুত্রে দুকলির কিসের ভয়, কিসের লোভ ? আকাশের মাঝামাঝি সেই সূৰ্য্য, তেমনি প্ৰচণ্ড রোদ। আটুলিগার মেটে পথ কুঁড়ে ঘর বনবাদােড়, কৰ্ত্তাদের দোতলা দালান, শালবনের সবুজ ঢাল, সব তেমনই আছে বঁাশবনের সোদাগান্ধী নিবিড় ছায়ায়। নতুন একটা পৃথিবীর জন্ম হল পাচুর জন্য ! অথবা তার কিশোর জীবনের সমস্ত শোভা সমস্ত আনন্দ সব তেজ সব উদ্দীপনায় সামঞ্জস্য ঘটেছে। এই চড়া রোদে ঘামতে ঘামতে বাড়ীর পথে হেঁটে চলায়। তাই দিগ বিজয়ী নাচের আমেজ বোধ হয়। প্ৰথমেই মনে হয়, পাকা কি ভাববে? এ কৌতুহল এত প্ৰচণ্ড, পাকার মনোভাব আন্দাজ করতে এমন আগ্ৰহ বোধ করে। পাচু যে, তার ইচ্ছা হয় এখুনি আবার R 8N) ( engRg )-3b