পাতা:জীয়ন্ত - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এটা সত্যি সত্যি কানাই-এর কথা হলে নরেশ গায়ে মাখত না। একটু ক্ষুঞ্জ হয়ে কেটে পড়ত। কিন্তু পাকা কানে কানে মন্ত্রণা দিয়েছে কানাইকে । ক্ষোভে দুঃখে অপমানে সে যেন ফেটে পড়ে, কথা জড়িয়ে যায়। তার জিভে । তোর সঙ্গে কোন দিন যদি আর কথা বলি পাকা, •• আমি তোর কি করলাম ? থাকতে চাও সঙ্গে থাকে। কিন্তু বারোটা বেজে গেল, একটা বেজে গেল বলে জালাতে পারবে না। নরেশ যেন কেঁদে ফেলবে। পরীক্ষণে সে ছুটে চলে যায় মোড়ের দিকে । কানাই কিছু বলে না। বুড়োর মত, বড়র মত, তার ধৈৰ্য্য সময় সময় নার্ভাস করে দেয়। পাকাকে। বন্ধু যদি তার কেউ থাকে এ শহরে, সে কানাই। একমাত্র সে-ই তার মুগ্ধ ও অনুগত সাখী নয়, সমান বন্ধু। সব চেয়ে প্ৰাণ খুলে শুধু ওরই সঙ্গে সে মিশতে পারে। তবু সময় সময় ওর সঙ্গও তার বিরক্তিকর লাগে। মনে হয় তার প্রায় সব রকম পাকামিতে যোগ দিলেও দিচ্ছে আলগা আলতোভাবে, সব বিষয়ে সে যেন খুব সংযত, ভারি শক্ত তার ভেতরটা। NS) মোড়ে বনমালীর চায়ের দোকানটার দিকে এগোতে এগোতে পাকা নিজেই অনর্গল কথা বলে যায়। চায়ের দোকান তখন প্ৰায় ফাকা হয়ে এসেছে। ভিড় হয়। সকাল ও সন্ধ্যার দিকে। তেরাচা করে আটকানো কাঠের পায়ায় বসানো সাদাসিদে তক্তা হল চায়ের টেবিল, পালিশ পৰ্য্যন্ত করা হয় নি। সরু লম্বা বেঞ্চিটার কোণের দিকে বসে ছিল একুশ-বাইশ বছরের একটি ছেলে। পাকা তার মুখ চেনে, নাম জানে, কিন্তু পরিচয় নেই। তার নাম অমিতাভ, কলকাতায় কলেজে পড়ে। সিস্কের মত মিহি একরাশি চুল, চওড়া কপাল, মাঝখানে খাঁজ কাটা চ্যাপটা মােটা চিবুক। ওকে দেখলেই পাকার মনে হয়, কঁচা বয়সের সাধারণ qक)ि RV)