পাতা:জীয়ন্ত - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কানাই বলে, নরেশকে নিয়ে এত কথা কেন ? ওরকম কত ছেলে আছে । আছে বলেই তো । তোর এত মাথা ব্যথা কেন ? ছেলেরা বিগড়ে যাবে, মাথা ব্যথা হবে না ? কি করাবি তুই ? নিজে খাঁটি থাকলেই হল। না। যতটুকু পারি করব। একটা ছেলেকেও যদি বঁাচাতে পারি সেটা কি কম হ’ল ? যেমন নরেশকে বঁচিয়ে মানুষ করছিস ? যতক্ষণ ভাল লাগবে ততক্ষণ পা। চাটতে দিবি, খুশি হলে তাড়িয়ে দিবি। এমনি করে যদি ছেলেদের মানুষ করা যেত, কালীদাকে একটা ছেলে তৈরি করতে এত কাণ্ড করতে হত না। পাকা বুড়োর মত হাসে । কালীদা বেছে বেছে মনের মত ছেলে নিয়ে ক্লাব করেছেন। একটু দুর্বল ছেলে এলেই সে বাতিল। এই ছেলেদের কি হবে ? এদের অ্যাবনরম্যালিটি এদের গোল্লায় নিয়ে যাচ্ছে যে ? এদের যদি কিছু করতে পারতেন কালীদা, বুঝতাম। অমিতাভ শুনছিল। পাকারও তা অজানা নয়। কানাই গম্ভীর হয়ে বলে, এদের জন্যই করছেন কালীদা । তাই এত বাছবিচার ? এত কড়াকড়ি ? হ্যা, তাই এত বাছবিচার, এত কড়াকড়ি। তুই ভাবছিস একটি দুটি ছেলের কথা, তোর দু-একজন বন্ধুর কথা, কালীদা ভাবছেন সব ছেলের কথা, সারা দেশের সমস্ত মানুষের কথা। দেশটাই অ্যাবনরম্যাল, তুই কটা ছেলের অ্যাবনরম্যালিটি ঘূচাবি ? পাকা চুপ করে থাকে। কানাই বুড়োর মত কথা বলছে। কালীদার মত। কানাই বলে, দেশ স্বাধীন না হলে ভাল শিক্ষার ব্যবস্থাও হয় না, কিছুই হয় না। বাছা বাছা ছেলে নিয়ে গড়তে পারলে তারাই দেশকে স্বাধীন করতে পারে। কালীদা তাই অমিতাভ ডাকে, কানাই ! AC