পাতা:জীয়ন্ত - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

না। বোধ হয়। এই কারণে যে সেটাই দাড়িয়ে গেছে প্ৰথা। টাউন হলটি পুরানো, দেয়ালে কয়েকটি বড় বড় তৈলচিত্র, কয়েকস্থানে বসানো কয়েকটি মৰ্ম্মর মূৰ্ত্তি এবং টেবিল চেয়ার বেঞ্চগুলি অযথা ভাৱিকি গঠনে গুরুগভীর। LDB BB BgDB DDBD DBDBBDBBD DDLDBL DBDD DBDDBB S সারা বছর ফাকা পড়ে থাকে থিয়েটারের হলটির আশেপাশের জায়গা, সন্ধ্যার পর সেখানে হয়তো শেয়ালও ঘোরাফেরা করে নিঃশঙ্ক চিত্তে, অসংখ্য বাদুড়-চামচিকে যে হলটার ভেতরে বাসা বেঁধেছে তার প্রমাণ পাওয়া যায় অভিনয়ের রাত্রেও—অত্যন্ত আবেগপূর্ণ বক্তৃতার সময়ও হয়তো চামচিকে নায়কের গালে ঝাপটা দিয়ে নায়িকার ওড়নায় জড়িয়ে গিয়ে দর্শকদের হাসায়। তবে তাতে অভিনয় মাটি হয় না। এক মিনিট পরে কেউ মনেও রাখে না। চামচিকের কথা । নিখিল ঘোষাল এই ক্লাবের সেরা অভিনেত্রী। ক্লাব স্থাপনের পর প্রথম নাটকে সতর-আঠার বছর বয়সে সে নায়িকার পার্ট করেছিল, সাত-আট বছর পর আজও কেউ তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাকে অতিক্রম করে যেতে পারল না। পড়াশোনা ছেড়ে সে। ডিষ্ট্রিক্ট বোর্ডে চাকরি নিয়েছে, পাড়ার একটি কালো মেয়ের সঙ্গে প্ৰেম করে তাকে বিয়ে করেছে বছর দুই আগে বাড়ীর লোকের সঙ্গে লড়াই করে, ক’মাস আগে একটি মেয়ে হয়েছে তার। রোগ ছিপছিপে গড়নটি তার অবিকল বজায় আছে, গোফদাড়ি কামিয়ে মুখে রঙ মেখে বুকে কাঠের বাতুল দুটি এটে নিজের স্ত্রীর একখানা জমকালো সিস্কের শাড়ী পরে ( ক্লাবের সভ্যরা অভিনয়ের জন্য দরকারি সাধারণ পোশাক নিজেদের বাড়ী থেকেই আনে, বিশেষ পোশাকের ব্যবস্থা ক্লাবের আছে) সে যখন এবারও স্টেজে এসে দাড়াল, পুরুষেরা তাকাল সচকিত হয়ে, মেয়েদের চোখের কোণে ঝিলিক মেরে গেল ঈর্ষ। কবে বগী এসেছিল বাংলায়, তখনকার মেয়েদের বিশেষ ধরণের বেশ ধারণ করার সুযোগে একেবারে মোহিনী হয়ে নিখিল নেমেছে স্টেজে, বাস্তব জীবনে কোনো মেয়ের আজ যে সুযোগ স্বাধীনতা নেই। 8 ዓ