পাতা:জীয়ন্ত - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাবডেপুটি হলেও লোকে কিছু ভয় করত, শ্ৰীমন্তও হয়তো বাষ্ঠী মেরামতেীয় অনুরোধটা অমান্য করতে সাহস পেত না, কিন্তু মুলেফকে কে মানে, একটা ছেচড়া চোরকেও যার পুলিস দিয়ে বেঁধে এনে জেলে দেবার ক্ষমতা নেই? অথচ সে হাকিম, জোর করে ভাড়া না দিলে বদনাম রটৰে যে অমুক ? হাকিম বাড়ী ভাড়া দেয় না-জজসায়েবের কানে গেলে রাগ করবে, ধমক দেবে। এ এক বড় আপসোস স্বরেনের, বড় সে ঈর্ষা করে পুলিসী ফৌজদারী হাকিমদেৱ । ছাতটা হোগলা দিয়ে ঢেকে সেখানে সকলের পাতা পাতবার ব্যবস্থা। ভিতরের উঠানে ছোট সামিয়ানার নীচে বিয়ের আসর। সামনের অঙ্গনে মন্ত সামিয়ানার তলে বসবার জন্য ফরাস ও চেয়ার। ডে লাইট জলে’ আর কারবাইড পুড়ে’ দরকারের চেয়ে অনেক বেশি আলোকিত করেছেচারিদিক। যে ঘর আর আনােচ কানাচে এ আলো পড়ছে না। সেখানে জলছে সাধারণ লণ্ঠন। শুধু আলোর বাড়াবাড়ি নয়। রাত আটটা নাগাদ বর নিয়ে বরযাত্রীরা এসে হাজির হবার পর কিছু বাজিও পুড়ল, তুবড়ি এবং হাউই। তখন সাধারণ নিমন্ত্রিতের অনেকেই এসে গেছে, বিশিষ্ট ব্যক্তিরা শুরু করেছে আসতে। সকলের সঙ্গে কুশ ঘাসের আসনে বসিয়ে পাতায় খাওয়ানোর বদলে এইসব পদস্থ ও সন্ত্রান্ত লোকগুলিকে বড় একটা ঘরে ভিন্নভাবে বিশেষভাবে খাওয়াবার ব্যবস্থা হয়েছে বটে। কিন্তু আসরে বসবার জন্য সাধারণ ভদ্রলোকের নাগালের বাইরে পৃথক কোন রিজার্ভ ব্যবস্থা করা হয় নি। তাদের জন্যও ওই সাধারণ চেয়ার। তবু যেন কি ভাবে সক্রিয় কৌশলে প্ৰকৃতির কোন অলঙ্ঘ্য নিয়মে আপনা থেকেই বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বসবার একটা নিজস্ব এলাকা সকলের মধ্যে গড়ে উঠছে দেখা যায়। ফরাসে একাকার হয়ে গেছে ছোট-বড় সাধারণ ভদ্রলোক, চেয়ারের সারিগুলির একদিকে খানিকটা মাননীয় ও গণনীয় উকিল ডাক্তার চাকুরেদের মধ্যে পৰ্য্যন্ত মেশাল পড়েছে সাধারণ ছোট-বড় ভদ্রলোকের, কিন্তু অপর-দিকে শহরের শুধু সেরা ব্যক্তিদের নিছক নির্ভেজাল ঘাঁটি। ঘাঁটি গড়ার কেন্দ্রটা সহজেই লক্ষণীয়, কয়েকজন বড় অফিসার। ওঠাবসা নড়াচড়া হাসিকথা R