পাতা:জীয়ন্ত - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শান্ত সমাহিত স্তব্ধ সভা। অনন্ত উঠে দাড়ায়। আপনজনের মত মৃদু। হাসি আর শান্ত স্নিগ্ধ দৃষ্টি নিয়ে আবার তাকায় চারিদিকে। বলে, আমায় কি বিপদে ফেললেন বলুন তো ? এতদিন পরে ফিরে এলাম, কোন কিছু জানি না, আমাকেই করে দিলেন সভাপতি ! আপনাদের স্নেহ গ্ৰীতির সম্মান আমি তুচ্ছ করব না। ভুল চুক হলে দায়ী। কিন্তু আপনারা। অনন্ত বসে, ভুবন ও তার অনুগতদের মধ্যে গুঞ্জন আরম্ভ হয়। ভুবন হঠাৎ উঠে দাড়িয়ে বলতে আরম্ভ করে, একটা গুরুতর, অতি গুরুতর বিষয়ে এ সভা ডাকা হয়েছে। সভাপতি মহাশয় অনুমতি দিলে অনন্তও উঠে দাঁড়ায়। বিক্ষুব্ধ জনতাকে সংযত করার ভঙ্গিতে দু’হাত তুলে বলে, নিশ্চয়। নিশ্চয়। এবার সভার কাজ আরম্ভ হবে। এই ছেলেটির छूछेॉभिव्र দুষ্টামির। ভুবন গর্জন করে ওঠে, আমাকে আগে বলতে দিতে হবে। আমি ব্যাপারটি সভায় উপস্থিত করতে চাই । অসহায় হতাশভাবে অনন্ত এদিক ওদিক সকলের মুখের দিকে তাকায়, ভুবনের বাহাদুরিতে, গৰ্জনে, সে বড় বিব্রত, বিরক্ত, আহত হয়েছে। ভুবনের দিকে চেয়ে জোর গলায় কিন্তু বিনা গৰ্জনে সে বলে, সবাই বলবেন, যার যা কিছু বলার আছে। কিন্তু হৈ হৈ রৈ রৈা হলে তো আমি এখানে থাকতে পারব না। একটা সামান্য তুচ্ছ ব্যাপার নিয়ে হৈচৈ আমার বিশ্ৰী লাগে, কুৎসিত লাগে। দেশের সব কাজ করা যখন বাকি আছে, দেশকে স্বাধীন করার চেষ্টায় প্ৰাণ বিসর্জন করা তিন দরজায় জমায়েৎ ছেলের উল্লাস জানায়। ভুবন হঠাৎ চমকে ওঠে। সভা আবার থমথম গামাগম করে । আমি বলি কি, খানিকক্ষণ অপেক্ষা করে অনন্ত বলে, যে ছেলেটির বিচারের জন্য আমরা জমা হয়েছি, তাকেই আগে তার যা কিছু বলার আছে বলতে দেওয়া হোক। এটা নিশ্চয় ইংরেজের আদালত নয়, যেখানে স্বরাজ চাই বলেছিলাম প্ৰমাণ হতে না হতে আমার ছ’মাস জেল হল ? ছেলেটি আগে বালুক, দোষ করেছে কি করে নি। যদি স্বীকার না করে, তখন দোষ প্ৰমাণ V)