পাতা:জোড়া পাপী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০
দারোগার দপ্তর, ২০৪ সংখ্যা।

বলে। বাবুটার নাম নরেন্দ্রনাথ মুখো, ব্রাহ্মণ সন্তান। যদি কলিকাতার হাটখোলায় তাহার বাড়ী হইত, তাহা হইলে তিনি হাওড়া ষ্টেশন হইতে আসিবেন কেন? যখন তিনি হাওড়া স্টেশন হইতে গাড়ী ভাড়া করিয়াছিলেন, তখন তিনি নিশ্চয়ই কোন দূরদেশ হইতে আসিয়াছেন। আর যদি কলিকাতায় হাটখোলাতেই তাহার বাড়ী হয় এবং তিনি নিজ বাড়ীতেই প্রত্যাগমন করিতেছিলেন, তাহা হইলে কোচমানকে বাগবাজারে লইয়া যাইতে বলিবেন কেন? সুতরাং কলিকাতা হাটখোলায় যে তাহার বাড়ী নহে তাহা স্পষ্টই বুঝিতে পারিলাম।

 চন্দননগরে যে হাটখোলা আছে তাহাও গঙ্গার তীরে। নাথ কি তবে সেই স্থান হইতেই আসিতেছিলেন? যে রমণী তাঁহার সঙ্গে ছিল, যিনি খুন হইয়াছেন, তাঁহারই বা পিত্রালয় কোথায়? বাগবাজারের কোন স্থানে গাড়ী লইয়া যাইবার কথা ছিল, কোচমান নিশ্চয়ই সে কথা জানিত না। নতুবা সে নিশ্চয়ই উহা ব্যক্ত করিত।

 এই প্রকার নানা চিন্তায় প্রায় এক ঘণ্টাকাল অতীত হইল। বেলা প্রায় চারিটা বাজিল। আমি অগত্যা চন্দননগরে গিয়া নরেন্দ্রবাবুর সন্ধান লইতে মনস্থ করিলাম। নিকটেই টাইমটেবল ছিল-দেখিলাম, সাড়ে চারটার সময় একখানি টেন ছাড়ে। সত্বর প্রস্তুত হইয়া একজন কনষ্টেবলকে একখানি সেকেণ্ডক্লাশ গাড়ীভাড়া করিয়া আনিতে বলিলাম।

 একবার ভাবলাম, পুলিশের বেশেই চন্দননগয়ে যাত্রা করিব, কিন্তু পরক্ষণে আমার মতের পরিবর্তন হইল।—ছদ্মবেশেই যাইতে স্থির করিলাম। তদনুসারে একজন ভদ্রলোকের বেশ ধরিয়া