পাতা:জোড়া পাপী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪
দারোগার দপ্তর, ২০৪ সংখ্যা।

 যু। এক দূর-সম্পর্কীয় বিধবা ভগ্নী-বলিতে গেলে তিনিই সংসারের গৃহিণীস্বরূপ। তাহার বিনানুমতিতে কেহ কোন কার্য্য করিতে সাহস করেন না।

 এই প্রকার কথোপকথন হইতেছে, এমন সময়ে সারদাচরণ তথায় আগমন করিলেন এবং কিছুক্ষণ অন্যান্য কথাবার্তার পর আমার দিকে চাহিয়া বলিলেন, “আপনার ন্যায় লোকের উপযুক্ত আহারাদি সংগ্রহ করা আমার ক্ষমতার বহির্ভূত। আজ আপনার বিশেষ কষ্ট হইতেছে দেখিতেছি।”

 আমি হাসিয়া বললাম, “অমন কথা বলিবেন না, আমার এই সঙ্গীর মুখে যাহা শুনিলাম, তাহাতে আপনাকে পরম সৌভাগ্যবান বলিয়াই বোধ হয়। আপনি যদি আমার ন্যায় দরিদ্রের আহার দিতে না পারিবেন, তবে পারিবে কে? সামান্য শাকান্ন হইলেই আমি পরম পরিতুষ্ট হইয়া থাকি।”

 সারদাচরণও হাসিতে হাসিতে বলিলেন, “আহারের জন্য ভাবি না, কিন্তু সত্যই আজ আপনার শয়নের বড় কষ্ট হইবে।”

 আমি বিস্মিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলাম, “কেন—এই বৈঠকখানায় স্বচ্ছন্দে শয়ন করিয়া রাত্রিযাপন করিব। আপনার কোন চিন্তা নাই। যেমন করিয়াই হউক, যখন আপনার আশ্রয়ে আসিয়া পড়িয়াছি, তখন আমার কোন কষ্ট হবে না।”

 সারদাবাবু বলিলেন, “আপনি অতি সজ্জন, তাই ওকথা বলিতেছেন। কিন্তু আপনাকে কেমন করিয়া এই বৈঠকখানায় শয়ন করিতে বলিব। উপরে দুই তিনটা ঘর আছে—তাহারই একটাতে আপনি শয়ন করিবেন। তবে ঘর গুলি প্রত্যহ ব্যবহার হয় না। বলিয়া কিছু অপরিষ্কার।”