পাতা:জোড়া পাপী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
দারোগার দপ্তর, ২০৪ সংখ্যা।

 কথায় বলে, ইচ্ছা থাকিলে পথ পাওয়া যায়। কথাটা মিথ্যা নহে। অনেক চেষ্টার পর, আমি দেখিলাম, সম্মুখে এক অতি সঙ্কীর্ণ পথ। দাড়াইতে চেষ্টা করিলাম, পারিলাম না। আরও কিছুক্ষণ সেই স্থানে পড়িয়া রহিলাম, পরে অনেক কষ্টে বসিয়া বসিয়া সেই পথে গমন করিলাম। প্রত্যেক পদবিক্ষেপে আমার পদদ্বয় কর্দমাক্ত হইতে লাগিল, পচা দুর্গন্ধ যেন চতুর্গুণ বৃদ্ধি হইল, আমার বমি হইবার উপক্রম হইল; কিন্তু আমি কিছুতেই পশ্চাদপদ হইলাম না।

 অল্প অল্প করিয়া কিছুদুর অগ্রসর হইলে পর, সহসা শীতল বায়ু আমার দেহ স্পর্শ করিল। এতক্ষণ সেই দুগন্ধ ও এক প্রকার উত্তপ্ত বায়ুর মধ্যেই ছিলাম, শীতল বায়ু সেবনে মনে স্ফূর্ত্তি হইল। আমি উৎসাহান্বিত হই। আরও অগ্রসর হইতে লাগিলাম।

 এইরূপে আরও খানিক দূর গমন করিয়া একটা ভাঙ্গা দরজা আমার নয়নপথে পতিত হইল। প্রথলিত দিয়াশলাই এর কাটার সাহায্যে আমি সেই দ্বারের নিকট উপস্থিত হইলাম। দেখিলাম, একটা প্রকাণ্ড নারিকেল বৃক্ষ ভাঙ্গিয়া সেই দ্বারে পতিত, সম্ভবত সেই পতনশীল নারিকেলবৃক্ষের ভরেই দরজাটা ভাঙ্গিয়া গিয়াছে।

 দ্বার উন্মুক্ত দেখিয়া আমি নিমেষ মধ্যে তথা হইতে বহির্গত হইলাম। দেখিলাম, আমি একটা উদ্যানের ভিতর আসিয়া পড়িয়াছি। বাগানটী কাহার? যে বাগানে আমার এই দুর্দশা হইয়ছিল, সেখান হইতে কতদূরে আসিয়া পড়িয়াছি? তখন রাত্রিই বা কত? কোথায় যাইলে অবশিষ্ট রাত্রিটুকু নির্ব্বিবাদে অতিবাহিত করিতে পারিব? এই সকল প্রশ্ন তখন আমার মনোমধ্যে উদিত হইতে লাগিল। আমি আর অলোক জালিতে