বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:জ্ঞাতি শত্রু - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
8
দারােগার দপ্তর, ২০২ সংখ্যা।

করিলেন এবং দ্বারস্থ কনষ্টেবলকে কি জিজ্ঞাসা করিয়া, তাহার সহিত অফিস-ঘরের দরজার দিকে আসিতে লাগিলেন।

 কিছুক্ষণ পরেই কনষ্টেবল তাঁহাকে আমার সম্মুখে আনায়ন করিলেন। তিনি নমস্কার করিলে আমি তাঁহাকে বসিতে বলিলাম। তিনি তখনই আমার অনুরোধ রক্ষা করিয়া কাঁদকাঁদস্বরে বলিলেন, “মহাশয়! আমার সর্ব্বনাশ হইয়াছে। আমার পিতৃস্থানীয় জ্যেষ্ঠকে কে হত্যা করিয়াছে।”

 অতি কষ্টে এই কথাগুলি বলিয়া যুবক মস্তক অবনত করিলেন। তাঁহার চক্ষু দিয়া দরদরিতধারে বাষ্পবারি বিগলিত হইতে লাগিল। আমি তাঁহার সে অবস্থায় কোন কথা জিজ্ঞাসা করা যুক্তিসিদ্ধ বিবেচনা করিলাম না।

 যুবকের বয়স অনুমান ত্রিশ বৎসর। তাঁহাকে দেখিতে গৌরবর্ণ ও সুপুরুষ। কিন্তু তাঁহার দেহের লাবণ্য ছিল না। চক্ষুদ্বয় প্রশস্ত হইলেও যেন কোটরগ্রস্ত, তাহার নিম্নে কালিমা-রেখা। ভ্রাতৃবিয়োগে তাঁহার এই প্রকার পরিবর্ত্তন হইয়াছে কি না তাহা বুঝিতে পারিলাম না। যুবকের পরিধানে একখানি পাত্‌লা কালাপড়ে ধুতি, একটা আদ্ধির পাঞ্জাবি জামা, একখানি চাদর। পায়ে এক জোড়া বার্ণিস করা জুতা।

 কিছুক্ষণ পরে যুবক কথঞ্চিৎ শান্ত হইলে আমি অতি মৃদুভাবে জিজ্ঞাসা করিলাম, “কে আপনার জ্যেষ্ঠকে হত্যা করিয়াছে? কি হইয়াছে, সকল কথা পরিষ্কার করিয়া বলুন, আমি এখনই আপনার সহিত যাইতেছি।”

 আমার কথায় যুবক আমার মুখের দিকে চাহিলেন। তাঁহার মুখ দেখিয়া বোধ হইল, তিনি যেন অনেকটা আশ্বস্ত হইয়াছেন।