পাতা:জ্ঞানাঙ্কুর ও প্রতিবিম্ব - চতুর্থ খণ্ড.pdf/২৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“193ల এবম্বিধ ৰুচির পরিবর্তন কি অকারণ সদ্ভূত ? যে যত দুরবস্থাপন্ন—সে তত মছদবস্থার আকাঙ্ক্ষী। যে ভিক্ষুক সে নিয়ত রাজপদের আকাঙ্ক্ষা করে, যে মূর্থ সে বিদ্বান হষ্টয়া কি সুখ জানিতে চায়, যে দুৰ্ব্বল সে এক মুস্ট্যাঘাতে সিংহ বধ করিবার শক্তি প্রার্থনা করে, যে বালক সে সংসারে কর্তৃত্ব করিতে ইচ্ছা করে, যে বালিকা সে যুবতী হইয় গৃহ কৰ্ম্মে নিযুক্ত হইতে চায়। এইরূপে উন্নত পদে সুখ থাকুক বা নাই থাকুক মানব তাহা আয়ত্ত করিতে লোলুপ । ইছা মানব হৃদয়ের ‘ অপরিবর্তনশীল প্রবৃত্তি । মানব এইরূপে উন্নত হইতে চাহে বটে, কিন্তু ভজন্য তাহার যথোচিত যত্ন বা বিলম্ব করিতে ভর সছে না। ভিক্ষুক যথাবিহিত যত্ন, উদ্যম ও পরিশ্রম সহকারে সংসার ক্ষেত্রে অদৃষ্ট চালনা করিলে কালে নরেশবৎ সম্পত্তিশালী হওয়া অসস্তব নহে। কিন্তু তাহার সে বিলঙ্গ সছে না—সে প্রাতে উঠিয়াই আপনাকে ত্রিভুবনের অধীশ্বর দেখিতে চলছে । বালক অপেক্ষা করিলে অবশ্যই সময়ে বুদ্ধ হইয়া সংসারের কর্তৃত্ব করিতে পরিবে । কিন্তু তাহার ইচ্ছা, এখনই এমন কিছু হয় যে বাটীর রাম চাকর তাছাকে কৰ্ত্তা মহাশয়ের মত ভয় করে ও বড় গিন্নি তা সমালোচন (জ্ঞানকুর চৈঃ, ১২৮২ হার খাবার লইয়া ব্যতিব্যস্ত হন । মানবের বাসনা সমস্তই এবম্বিধ অসম্ভব । অসম্ভব বাসনা সিদ্ধ হওয়া সুকঠিন। সিদ্ধ হয় না বলিয়া বাসন কদাচ হৃদয় হইতে নিৰ্ম্মল হয় না,— তাহার আলোচনা করিয়াও মানব সুখী হয় । মনে মনে সেই বাসনার আলোচনা করে কিন্তু কেহ প্রকাশ করে না,—যে প্রকাশ করে আমরা তাছাকে পাগল বলি। বাঙ্গালিও মনুষ্য । সুদীর্ঘ কাল দাসত্বের কঠিন নিগড় নিবদ্ধ থাকিয়া তাহারণ হীন ও দুর্দশাপন্ন হইয়াছে সত্য, কিন্তু সেই সঙ্গে তাছাদের মানসিক বৃত্তি নিচয় যে বিলীন হুইয়াছে ইহা আমরা মনেও স্থান দিতে সংকুচিত হই। ইংরাজি শিক্ষার প্রভাবে বাঙ্গালির বাসনা অসীম হইয়াছে । সে বাসন চরিভার্থ হওয়া স্বদুর পরাহত । বিশেষ চেষ্টা, বিশেষ যত্ন ও বিশেষ সময় ব্যয় ব্যতীত তাহা হওয়া অসম্ভব । অগত্যা সফলিত তাহারা মনের বাসনা আলোচনা করিয়া সুখ ভোগ করিতেছে । এই জন্যই তাহtদের ত্রুচির নিন্দ । এই জন্যই উমেশ বাবুর এত বিদ্রুপ। কিন্তু আমরা বলি বাঙ্গালি তজ্জন্য দোষী নছে । যাহা স্বাভাবিক, বাঙ্গালি কি সাহসে তাছার অন্যথা করিবে ? বাঙ্গালি স্বাভাবিক প্রবৃত্তি স্রোতে ভাসিয়া |