পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঝাঁশির রাণী।
১৩

করিবে—্ড্যুক অফ ওএলিংটন প্রভৃতি রাষ্ট্রনীতিপটু বিচক্ষণ ব্যক্তিগণ এই রূপ বারম্বার প্রতিপাদন করা-সত্ত্বেও লর্ড ডালহৌসী তাহাদিগের কথায় কর্ণপাত করিলেন না। তিনি প্রথমে, সাতারার ছত্রপতি শহাজি মহা- রাজের গৃহীত দত্তক নামঞ্জুর করিয়া সাতারা আত্মগ্লাস করিলেন। পরে। নাগপুর ও তাঞ্জোরের এই গতি হইল। অবশেষে ঝশি রাজ্যের উপর তাহার উদ্যত বজ্র সবেগে আসিয়া পড়িল।

 আজ হইতে ঝাঁশি-রাজ্য খাস হইল এই আদেশ-লিপি ও ঘোষণাপত্র লইয়া মেজর-এলিস-সাহেব রাজবাটীতে প্রবেশ করিলেন। দরবার- মহলে চীক-পর্দার অন্তরালে রাণী ঠাকুরাণীর সহিত তাহার ভেট হইল। এলিস-সাহেব ঘোষণাপত্র পড়িয়া শুনাইলেন এবং আপনাকে পূর্ণ পরি- মাণে বৃত্তি দেওয়া হইবে ও আপনার যথাযোগ্য মান-মর্য্যাদা পালিত হইবে” এই বলিয়া আশ্বাস দিলেন। কিন্তু কঁশি খাস করিয়া লওয়া হইল, এই দারুণবার্তা শুনিবামাত্র রাণী একেবারে বজ্রাহত হইলেন। ইহা দেখিয়া এলিস-সাহেব তাহাকে নানাপ্রকার সান্ত্বনা করিবার চেষ্টা করিয়া অবশেষে বিদায় প্রার্থনা করিলে, রাণী ঠাকুরাণীর সুমধুর কণ্ঠ হইতে এই করুণোক্তি সবেগে উচ্ছসিত হইল;—“মেরা ঝশি দেঙ্গা নেই!”

 ঝাঁশি ব্রিটিশ-রাজ্যভুক্ত হইয়া গেলে, বুলেখণ্ডের পোলিটিকেল এজেণ্ট ম্যালকম-সাহেব, হিন্দুস্থান-সরকারের পররাষ্ট্রীয় সেক্রেটরিকে ঝাঁশির রাণী সম্বন্ধে কতকগুলি প্রস্তাব করিয়া এক মন্তব্য-লিপি লিখিয়া পাঠাইলেন। সেই প্রস্তাবগুলির স্থূল মর্ম্ম এই —(১) রাণীর জীবদ্দশা-পর্যন্ত রাণীকে ৫০০০ টাকা করিয়া মাসিক বৃত্তি দেওয়া হয়। (২) বাসের জন্য রাণীকে ঝুঁশির রাজবাটী অর্পণ করা হয়—এবং আরও বলিলেন, সেই রাজবাটী রাণীর নিজ সম্পত্তি, এইরূপ বুঝিতে হইবে। (৩) মহারাজা গঙ্গাধর-রাওর ইচ্ছানুসারে, রাজ্যের জহরৎ ও তহবিলের অবশিষ্ট নগদ টাকা, হিসাব করিয়া রাণী-সাহেবকে দেওয়া হয়