পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঝাঁশির রাণী।
১৫

কিছুই জানা যায় না। নানাসাহেবের প্রেরিত মোক্তার আজিম-উল্লা-খা বিলাতে গিয়া মজা উড়াইয়া ও রুশীয় সৈন্যের সামিল হইয়া সিবাষ্টপুলের, লড়াই দেখিয়াছিলেন, এই মাত্র সংবাদ পাওয়া যায়, কিন্তু রাণী ঠাকুরাণীর প্রেরিত মোক্তারদিগের কোন সন্ধান পাওয়া যায় না। যাহা হউক, ইতিমধ্যে, কোর্ট-অ-ডাইরেক্টর, হিন্দুস্থান-সরকারের অবধারিত প্রস্তাবে পূর্ণ সম্মতি দিয়া, লাটসাহেবকে পত্র লিখিলেন। এদিকে রাণী ঠাকুরাণীর তখনও দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে তাহার মোক্তারের বিলাতে তাহার দাবী- সম্বন্ধে যথাসাধ্য আন্দোলন করিতেছে। উহা যে বৃথা আশা, অন্তঃপুর- চারিণী মহারাণী তখনও তাহা বুঝিতে পারেন নাই।

 ঝাঁশি ইংরাজের অধীন হইলে, শ্লীমান সাহেব আঁশির কমিশনর পদে প্রথম নিযুক্ত হইলেন। এইরূপে, ব্রিটিশ সরকারের মিত্র শিবরাও- ভাউর ঝাশি-রাজ্য তাহার উত্তরাধিকারীদিগের হস্ত হইতে চির-কালের মত বিচ্যুত হইল এবং

“ইদমেব নরেন্দ্রাণাং স্বর্গদ্বারমনৰ্গলং।
যদাত্মনঃ প্রতিজ্ঞা চ প্রজা চ পরিপাল্যতে।"

 এই নীতি সর্ব্বথা পরিপালিত না হওয়ায় পরিণামে কি বিষময় ফল উৎপন্ন হইল তাহা কে না জানে! ঝুঁশির এইরূপ শোচনীয় অবস্থা দেখিয়া, “আরাধনা-বলে সফল মেলে” রামদাস স্বামীর এই উক্তিতে রাণী কথঞ্চিৎ সান্ত্বনা অনুভব করিয়া স্বীয় অবশিষ্ট জীবিতকাল ঈশ্বরারা- ধনায় অতিবাহিত করিবেন, এইরূপ স্থির করিলেন। পতির পরলোক- প্রাপ্তির পর কিছু দিন পর্যন্ত তাহার নিতান্ত ঔদাস্য উপস্থিত হইয়াছিল। তিনি রাত্রি চারিটার সময় শয্যা হইতে গাত্রোত্থান করিয়া, স্নানাদি সমাধা। করিয়া আট ঘটিকা পর্যন্ত পূজার্চনা করিতেন। তদনন্তর পোষাক পরিয়া রাজবাটীর অঙ্গনে চার পাঁচটা ঘোড়া দৌড় করাইতেন, এগারটা বাজিলে নিত্যনিয়মিত দানক্রিয়া করিয়া আহার করিতেন। ভোজনের