পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮
ঝঁশির রাণী।

রমণী, কঠোর বৈধব্য-ব্রতানুষ্ঠানে দিনপাত করিতেছেন। ঝঁশি খাস হইবার পরেও, রাণী কোন প্রকার দুরাগ্রহ বা জি প্রদর্শন করেন নাই; তিনি অতি সহিষ্ণু, উদার-বুদ্ধি ও রাজনিষ্ট;—অতএব তাহার অধিকারের মধ্যে রাজদ্রোহ হওয়া একপ্রকার অসম্ভব, ইহাই স্কীন সাহেবের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল। অথচ এই সময়ে তলে-তলে, বিদ্রোহের যে গুপ্ত-পরামর্শ চলিতেছিল তাহা তিনি আদৌ জানিতে পারেন নাই। ২ জুন তারিখে ঝাঁশি-সিপাহীদিগের প্রকৃতি ভাব প্রকাশ হইয়া পড়িল। সেই দিন, একটা ঘরে আগুন লাগে। লোকে ভাবিল, উহা আকস্মিক ঘটনা মাত্র। তাহার পর, ৪ তারিখে, কালা-পদাতিক-পণ্টনের তৃতীয় দলের মধ্যে বিদ্রোহের প্রকাশ্য কার্য্য আরম্ভ হইল। গুরবকস্ নামক এই পণ্টনের হাওলদার কতকগুলি সিপাহী সঙ্গে লইয়া “ষ্টার ফোর্টের মধ্যে প্রবেশ করিল। এই ক্ষুদ্র ইমারতের মধ্যে, বন্দুক বারুদ গোলা, খাজনা-তহবিল সমস্তই রক্ষিত হইত। এই বিদ্রোহী সিপাহীরা তৎসমস্ত দখল করিয়া লইল। ইহা জানিতে পারিয়া, উপ সাহেব, দ্বাদশ পল্টনের বাকী লোকদিগকে একত্র করিয়া তাহাদিগের কাওয়াৎ (প্যারেড়) করাইলেন, এবং তাহাদিগকে প্রশমিত করিবারও বিবিধ চেষ্টা করিতে লাগিলেন। এই সমস্ত ভয়-চিছু দেখিবামাত্র, সমস্ত য়ুরোপীয় লোক ছাউনী ত্যাগ করিয়া সহরের মধ্যে প্রবেশ করিল। কাপ্তেন স্কীন ও গর্ডন সাহেব কেল্লার মধ্যে যাইবার জন্য সমস্ত য়ুরোপীয়দিগকে গুপ্তভাবে পরামর্শ দিলেন। কাপ্তেন ডনলপ সাহেবও তাহার সাহায্যার্থে একদল সৈন্য পাঠাইতে নোগাঙ্গের সেনা-নায়ককে পত্র লিখিলেন। পর দিন সকালে, কাপ্তেন স্কীন ও গর্ডন, ইহারা সেনা-নায়ক ডপ সাহেবের সহিত সাক্ষাৎ করিবার জন্য ছাউনী-স্থানে আসিলেন। তাঁহাদিগের মধ্যে গুপ্ত পরামর্শ হইয়া প্রতিবিধানের সমস্ত বন্দোবস্ত স্থির হইল। উলপ এন- সাইন্ টেলরকে সঙ্গে করিয়া, কাওয়াৎ-স্থানে কাওয়াৎ করাইবার জন্য