পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঝঁশির রাণী।
১৯

আসিলেন। পণ্টনের বিদ্রোহী সিপাহীরা দুই জনকে গুলি করিয়া মারিল। ঝাঁশির প্রধান সেনানায়ক নিহত হওয়ায়, বিদ্রোহিদল বিজয়ানন্দে উৎফুল্ল হইয়া উঠিল এবং অন্যান্য য়ুরোপীয়দিগকে যম-সদনে পাঠাই- বার ব্যবস্থা করিতে লাগিল। এই সময়ে, স্ত্রীপুত্র-সহ স্কীন—কমিশনর সাহেব, গর্ডন ডেপুটি কমিশনর সাহেব ইত্যাদি প্রায় ৪৫ জন কেল্লার মধ্যে অবস্থিতি করিতেছিলেন। তাহারা সশস্ত্র হইয়া দুর্গরক্ষণের ব্যবস্থা করিতে লাগিলেন। কেল্লার প্রকাণ্ড সিংহদ্বার রুদ্ধ করিয়া স্থানে স্থানে প্রস্তর-রাশি পাকার করিয়া রাখিলেন। বিদ্রোহিগণ ছাউনী-স্থিত য়ুরোপীয়দিগকে নিহত করিয়া কেল্লার অভিমুখে অগ্রসর হইল। কেল্লার অভ্যন্তরস্থ য়ুরোপীয়েরা প্রাণপণে যুদ্ধ করিয়া বিদ্রোহীদিগকে হটাইবার চেষ্টা করিল, এবং পর দিবস রাণী ঠাকুরাণীর নিকট সাহায্য প্রার্থনায় তিন জন য়ুরোপীয়কে রাজবাটীতে প্রেরণ করিল। কিন্তু বিদ্রোহীরা তাহ- দিগকে পথে ধৃত করিয়া নিহত করিল। এবং কতকগুলা পুরাতন তোপ তৈয়ার করিয়া কেল্লার উপর গোলা বর্ষণের উদ্যোগ করিল। কিন্তু সেই তোপগুলা বেমেরামৎ অবস্থায় থাকায়, কোন ফল হইল না। এদিকে, কেল্লার লোকেরাও বিদ্রোহীদিগের উপর গোলা-গুলি বর্ষণ করিতে লাগিল। তাহাতে অনেক বিদ্রোহী পিছু হাঁটিতে বাধ্য হইল। কিন্তু তাহাদের লোকসংখ্যা অধিক থাকায় তাহারা পুনঃ পুনঃ আক্রমণ করিতে লাগিল। অবশেষে তাহারা কেল্লার গুপ্তদ্বারের সন্ধান পাইয়া কেল্লার মধ্যে হল্লা করিয়া প্রবেশ করিল। এবং কেল্লার দরজা ভাঙ্গিতে প্রবৃত্ত হইল। য়ুরোপীয়েরা গুলিবর্ষণ করিয়া প্রাণপণে যুদ্ধ করিতে লাগিল। য়ুরোপীয় মহিলারাও যুদ্ধে সাহায্য করিতে লাগিল। কাপ্তেন স্কীন সাহেব চিতাবাঘের ন্যায় ইতস্ততঃ ঘুরিয়া ফিরিয়া সমস্ত তত্ত্বাবধান করিতে- ছিলেন। ইতিমধ্যে বিদ্রোহীদিগের মধ্যে একজন তীরন্দাজ লক্ষ্য সন্ধান করিয়া তাহার প্রাণসংহার করিল। ক্রমে য়ুরোপীয়দিগের গোলা-বারুদও