পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঝাঁশির রাণী।
৩৯

ইয়া সিপাহী পাহারা বসাইলেন। কঁশির অভিজাত, বিশ্বাসী ও দক্ষ ঠাকুর-মণ্ডলী ও বুণ্ডেল-বাসী সর্দারদিগকে একত্র করিয়া তাহাদিগের উপর সৈন্যের কোন কোন অংশের নেতৃত্বভার অর্পণ করিলেন। রূপে, অল্পকালের মধ্যেই কেল্লা ও সহর সংরক্ষণের সুন্দর বন্দোবস্ত হইল!

 এদিকে, ইংরাজ-সেনাপতি, সর-হিউ-রোজ, ২১ মার্চ তারিখে, সমস্ত দিন ধরিয়া ঋশির কেল্লা ও সহরের স্থিতি-প্রণালী সূক্ষ্ম রূপে পর্যবেক্ষণ করিলেন এবং সুবিধার জায়গা নির্বাচন করিয়া, সেই সেই স্থানে বাছা- বাছ। তোপ ও ফৌজ স্থাপন করিলেন। বাহির হইতে যাহাতে কোন-রূপ সাহায্য না আসিতে পারে, এই উদ্দেশে সমস্ত পথঘাট রুদ্ধ করিয়া স্থানে স্থানে ঘোড়-সওয়ার ও তোপখানা (আর্টিলরি) রাখাইয়া দিলেন। আবার স্থানে স্থানে পৃথক ভাবে তোপ ও পদাতিক সৈন্য স্থাপন করিলেন। প্রত্যেক সৈন্য-বিভাগের সেনানায়কদিগের মধ্যে যাহাতে শত্রু- সম্বন্ধীয় বার্তাদির চালাচালি হইতে পারে, তজ্জন্য তাহাদিগের মধ্যে তার- যন্ত্রের যোজনা করিলেন। একটা উচ্চ ভূমির উপর স্তম্ভ উঠাইয়া, তথা হইতে দুরবীণের সাহায্যে, যাহাতে কেল্লার অভ্যন্তরস্থ সমস্ত প্রদেশ দৃষ্টি- পথে পতিত হয়, এইরূপ বেধশালার (অৰ্জরটেরি) ন্যায় একটা স্থান নিৰ্মাণ করিয়া তথায় তার-আফিশ স্থাপন করিলেন।

 এই সময়ে আর একটা সুবিধা ঘটিল;—ব্রিগেডিয়ার স্টুয়ার্টের অধীনস্থ সৈন্য চন্দেরী হইতে আসিয়া পৌছিল। ২৩ তারিখে প্রকাশ্যভাবে যুদ্ধের আরম্ভ হইল। ইংরাজ-সৈন্য, ঝাশির নিকটস্থ সকল ময়দান ও উচ্চভূমি অধিকার করিয়া অবস্থিতি করিতেছিল। এক্ষণে তাহার কেল্লা আক্রমণের উদ্যোগ করিতে লাগিল। কিন্তু বিরুদ্ধ পক্ষের তলপের ভাল বন্দোবস্ত থাকায়, তাহাদের সকল চেষ্টা ব্যর্থ হইল। ইংরাজের ফেজি ও ঘোড়- সওয়ার অগ্রসর হইবা মাত্র, আঁশির গোলন্দাজেরা তাহাদের উপর প্রচণ্ড