পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৪
ঝাঁশির রাণী।

পর হইয়াছিলেন বলিয়াই মহারাষ্ট্রীয় রাজ্যের পতাকা আটক পর্যন্ত উডীয় মান হইয়াছিল; এক্ষণে আপনার ন্যায় শৌর্যশালী সর্দারেরা যদি এই সময়ে আমাদিগকে সাহায্য করেন তবেই আমাদিগের সিদ্ধি লাভ হইতে পারে; অতএব, আপনার তলবার ফিরিয়া লউন এবং আমাদিগকে উত্তমরূপে সাহায্য করুন।” রাও-সাহেবের এই সবিনয় মিনতি মান্য করিয়া রাণী তাহার তলবার পুনঃ গ্রহণ করিলেন। রাও-সাহেব পেশোয়া, সমস্ত সৈন্য একত্র করিয়া, তাহাদিগের কওয়াৎ করাইয়া, রাণীঠাকুরাণীকে ও তত্যা-টোপেকে সেনাপতি-পদে বরণ করিলেন।

 এদিকে সর-হিউ-রোজ, সসৈন্যে কাল্পী আক্রমণার্থ যাত্রা করিলেন এবং প্রথমে কুঁচ-সহর আক্রমণ করিয়া তাত্যা-টোপে ও বাদে-ওয়ালা নবাবকে যুদ্ধে পরাভূত করিলেন। এই যুদ্ধে অনেক বারুদ গোলা ও ধান্য তাহাদিগের হস্তগত হইল। যুদ্ধে পরাভূত হইয়া, ত্যাটোপে, রাও-সাহেব প্রভৃতি মণ্ডলী কাল্পীতে প্রত্যাগমন করিলেন। বাদেওয়ালে নবাবের যুক্তি-অনুসারে, রাও-সাহেব সমস্ত সৈন্যের ব্যবস্থা করিয়াছিলেন, রাণীঠাকুরাণীর পরামর্শ অনুসারে কাজ করেন নাই, এই হেতু, রাণী এই যুদ্ধে নেতৃত্ব গ্রহণ করেন নাই। রাণীর নিজ সৈন্য না থাকায়, তিনিও রাও-সাহেবদিগের সহিত কাল্পীতে ফিরিয়া আসিতে বাধ্য হইলেন। কাল্পীতে আসিয়া, রাণী সৈন্যের সুব্যবস্থা করিবার জন্য রাও-সাহেবকে বিশেষরূপে অনুরোধ করিলেন; তিনি বলিলেন, সুব্যবস্থা না থাকাতেই গত যুদ্ধে ইংরাজেরা জয়লাভ করিয়াছে। তাহার পরামর্শ-অনুসারে এবার রাও-সাহেব সমস্ত বন্দোবস্ত করিতে প্রবৃত্ত হইলেন। কিন্তু রাণীকে সমস্ত সৈন্যের নেতৃত্ব না দিয়া, আপনি সেনাপতি হইলেন। রাও-সাহেবের প্রাধান্য-লালসা ও যশেলিগা অত্যন্ত প্রবল ছিল—তাহার বিপুল সৈন্যের আধিপত্য একজন স্ত্রীলোকের হস্তে অৰ্পণ করিতে তিনি ইষ্ট মনে করিলেন না। তথাপি বাহাকারে বহুমান প্রদর্শন করিয়া