পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঝাঁশির রাণী ।
৬৫

রাণীর অধীনে ২০০/২৫০ অশ্বারোহী সৈন্য স্থাপন করিলেন এবং তাহাকে যমুনাভিমুখের দিক সংরক্ষণার্থ মিনতি করিলেন। রাণী তাহাদিগের নেতৃত্ব গ্রহণ করিয়া, সুব্যবস্থা সহকারে, তাহাদিগকে যথাস্থানে স্থাপন করিলেন। সৰু-হিউ-রোজ, একেবারে কাল্পীতে না গিয়া, প্রথমে গলাসহর আক্রমণ করিবেন স্থির করিলেন। এই সময়ে বিদ্রোহী-সৈন্যের বীরোৎসাহ সপ্তমে চড়িয়া উঠিয়াছিল—তাহারা যমুনার শপথ করিয়া বলিতে লাগিল, হয় ইংরাজদিগকে ধরাশায়ী করিব নয় আমরা যুদ্ধাঙ্গনে প্রাণ দিব। এই বলিয়া তাহারা নিরাপদ স্থান ছাড়িয়া ইংরাজদিগের তোপের আন্দাজের মধ্যে আসিয়া পড়িল। ইংরাজেরা এই সুবিধা পাইয়া প্রচণ্ড গোলাবর্ষণ করিতে লাগিল। কাল্পীর সৈন্য প্রাণপণে যুদ্ধ করিল বটে কিন্তু অবশেষে পরাভূত হইল! কাল্পীর অগ্রগামী সৈন্যদলের পরাভব হইয়াছে, এই সংবাদ অবগত হইবামাত্র, পেশোয়ার সমস্ত সৈন্য হতাশ হইয়া পড়িল। রাও-সাহেব পেশোয়া, বান্দেওয়ালা-নবাব প্রভৃতি মুখ্য যোদ্ধগণ চিন্তাগ্রস্ত হইয়া পলাইবার পরামর্শ করিতে লাগিলেন। সেই সময়, রাণী তাহাদিগকে সাহস দিয়া আপনার ঘোড়া আনিতে বলিলেন এবং তাহাতে সওয়ার হইয়া কতকগুলি সৈন্য সমভিব্যাহারে, ইংরাজদিগের দক্ষিণ পার্শ্ব সবেগে আক্রমণ করিলেন। তাহার এই ঝড়গতি আকস্মিক আক্রমণে ইংরাজ-সৈন্য একেবারে হটিয়া গেল এবং তিনি এরূপ সতেজে যুদ্ধ করিলেন যে ইংরাজ “লাইট ফিল্ড” তোপের গোলন্দাজেরা কিয়ৎকাল স্তব্ধ হইয়া রহিল এবং তাহাদের তোপ বন্ধ হইয়া গেল! শুধু তাহা নহে, রাণীঠাকুরাণী তোপের ২০ ফুট অন্তর-পর্য্যন্ত অগ্রসর হইলেন। তাঁহার দৃষ্টান্তে সাহস পাইয়া কাল্পীর অন্যান্য ফৌজও আসিয়া পড়িল। দুইপক্ষ একেবারে মুখামুখী হওয়ায় ঘোরতর যুদ্ধ বাধিয়া গেল। ইংরাজ গোলন্দাজেরা হতবীর্য্য হইয়া পলাইতে লাগিল। এই সংবাদ পাইয়া সরু-হিউ-রোজ স্বীয় উঠুারোহী সৈন্য লইয়া তৎক্ষণাৎ